পাতা:বৌ-ঠাকুরাণীর হাট - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
বৌ-ঠাকুরাণীর হাট

পাক্‌ড়া করিয়া রাখ্।” বলিয়া ঘর হইতে দ্রুতপদে বাহির হইয়া গেলেন।

 রাজা মন্ত্রীকে ডাকাইয়া কহিলেন,—“রাজকার্য্যে তােমার অত্যন্ত অমনােযােগ লক্ষিত হইতেছে।”

 মন্ত্রী আস্তে আস্তে কহিলেন,—“মহারাজ, এ বিষয়ে আমার কোন দোষ নাই।”

 প্রতাপাদিত্য তারস্বরে বলিয়া উঠিলেন “আমি কি কোন বিষয়ের উল্লেখ করিতেছি! আমি বলিতেছি, রাজকার্য্যে তােমার অত্যন্ত অমনােযােগ লক্ষিত হইতেছে। সে দিন তােমার কাছে এক চিঠি রাখিতে দিলাম, তুমি হারাইয়া ফেলিলে!”

 দেড় মাস পূর্ব্বে এইরূপ একটা ঘটিয়াছিল বটে, কিন্তু তখন মহারাজ মন্ত্রীকে একটি কথাও বলেন নাই।

 “আর একদিন উমেশ রায়ের নিকট তোমাকে যাইতে আদেশ করিলাম, তুমি লােক পাঠাইয়া কাজ সারিলে! চুপ কর! দোষ কাটাইবার জন্য মিছামিছি চেষ্টা করিও না! যাহা হউক, তােমাকে জানাইয়া রাখিলাম, রাজকার্য্যে তুমি কিছুমাত্র মনােযােগ দিতেছ না।”

 রাজা প্রহরীদের ডাকাইলেন। পূর্ব্বে রাত্রের প্রহরীদের বেতন কাটিয়াছিলেন, এখন তাহাদের প্রতি কারাবাসের আদেশ হইল।

 অন্তঃপুরে গিয়া মহিষীকে ডাকাইয়া কহিলেন,—“মহিষি! রাজপরিবারের মধ্যে অত্যন্ত বিশৃঙ্খলা দেখিতেছি! উদয়াদিত্য পূর্ব্বে ত এমনতর ছিল না। এখন সে যখন তখন বাহির হইয়া যায়। প্রজাদের কাজে যােগ দেয়। আমার বিরুদ্ধাচরণ করে। এ সকলের অর্থ কি?”

 মহিষী ভীত হইয়া কহিলেন, “মহারাজ, তাহার কোন দোষ নাই! এ সমস্ত অনর্থের মূল ঐ বড় বৌ! বাছা আমার ত আগে এমন