রামদাস? এমন ত পূর্ব্বে জানিতাম না।” আমি তৎক্ষণাৎ কহিলাম, “পূর্ব্বে জানিবেন কিরূপে? পূর্ব্বে ত ছিল না। আপনাদের ঘরে বিবাহ করিতে আসিয়াছেন, তাই যস্মিন্ দেশে যদাচার অবলম্বন করিয়াছেন।”
রাজা জবাব শুনিয়া বড়ই সুখী! ভাবিলেন রমাই হইতে তাঁহার এবং তাঁহার পূর্ব্বপুরুষদের মুখ উজ্জ্বল হইল ও প্রতাপাদিত্যের আদিত্য একবারে চির-রাহুগ্রস্ত হইল। রাজা যুদ্ধবিগ্রহের বড় একটা ধার ধারেন না। এই সকল ছােটখাট ঘটনাগুলিকে তিনি যুদ্ধবিগ্রহের ন্যায় বিষম বড় করিয়া দেখেন। এত দিন তাঁহার ধারণা ছিল যে তাঁহার ঘােরতর অপমানসুচক পরাজয় হইয়াছে। এ কলঙ্কের কথা দিনরাত্রি তাঁহার মনে পড়িত ও তিনি লজ্জায় পৃথিবীকে দ্বিধা হইতে অনুরােধ করিতেন। আজ তাঁহার মন অনেকটা সান্ত্বনা লাভ করিল যে সেনাপতি রমাই রণে জিতিয়া আসিয়াছে। কিন্তু তথাপি তাঁহার মন হইতে লজ্জার ভার একেবারে দূর হয় নাই।
রাজা রমাইকে কহিলেন “রমাই, এবারে গিয়া জিতিয়া আসিতে হইবে। যদি জয় হয় তবে তােমাকে আমার অঙ্গুরী উপহার দিব।”
রমাই বলিল “মহারাজ জয়ের ভাবনা কি? রমাইকে যদি অন্তঃপুরে লইয়া যাইতে পারেন, তবে স্বয়ং শাশুড়ী ঠাকুরাণীকে পর্য্যন্ত মনের সাধে ঘোল পান করাইয়া আসিতে পারি।”
রাজা কহিলেন, “তাহার ভাবনা? তােমাকে আমি অন্তঃপুরেই লইয়া যাইব।”
রমাই কহিল “আপনার অসাধ্য কি আছে?”
রাজারও তাহাই বিশ্বাস। তিনি কি না করিতে পারেন? অনুগত বর্গের কেহ যদি বলে, “মহারাজের জয় হউক সেবকের বাসনা পূর্ণ করুন্।” মহামহিম রামচন্দ্র রায় তৎক্ষণাৎ বলেন “হাঁ, তাহাই হইবে।” কেহ যেন মনে না করে এমন কিছু কাজ আছে, যাহা তাঁহা দ্বারা হইতে