পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রত্নতত্ত্ব
১১

গ্যাল্‌ভ্যানিক ব্যাটারি ভারতখণ্ডে ছিল না এবং সংস্কৃত ভাষায় অক্সিজেন্ বাষ্পের কোনাে নাম পাওয়া যায় না।

মধুসূদন শাস্ত্রী মহাশয় কর্ত্তৃক উক্ত প্রবন্ধের প্রতিবাদ

 আমাদের ভারত-ইতিহাস-সমুদ্রের পাতিহাঁস, বঙ্গসাহিত্যকুঞ্জের গুঞ্জোন্মত্ত কুঞ্জবিহারী বাবু কলম ধরিয়াছেন; অতএব প্রাচীন ভারত, সাবধান! কোথায় খোঁচা লাগে কী জানি! অপােগণ্ডর যদি কাণ্ডজ্ঞান থাকিবে, তবে নিজের সুধাভাণ্ডে দণ্ডপ্রহার করিতে প্রবৃত্তি হইবে কেন? অথবা বহুদর্শী প্রাচীন ভারতকে সাবধান করা বাহুল্য, উদ্যতলেখনী কুঞ্জবিহারীকে দেখিয়া তিনি পবিত্র উত্তরীয়ে সর্বাঙ্গ আবৃত করিয়া বসিয়া আছেন। তাই আমাদের এই আমড়াতলার দাম্‌ড়াবাছুরটি প্রাচীন ভারতে গ্যাল্‌ভ্যানিক ব্যাটারি এবং অক্সিজেনের সংস্কৃত নাম খুঁজিয়া পাইলেন না। ধন্য তাঁহার স্বদেশ-হিতৈষিতা।

 আমাদের দেশে যে এককালে গ্যাল্‌ভ্যানিক ব্যাটারি এবং অক্সিজেন বাষ্প আবিষ্কৃত হইয়াছিল, ভাই বাঙ্গালী, এ কথা তুমি বিশ্বাস করিবে কেন? তাহা হইলে তােমার এমন দশা হইবে কেন? আজ যে তুমি লাঞ্ছিত, গঞ্জিত, তিরস্কৃত, পরপদানত, অন্নবস্ত্রহীন দাসানুদাস ভিক্ষুক, জগতে তােমার এমন অবস্থা হয় কেন? কোন্ দিন তুমি এবং তােমাদের সাহিত্য-সংসারের এই সার সং-টি বলিয়া বসিবেন, অসভ্য ভারতের বাতাসে অক্সিজেন্ বাষ্পই ছিল না, এবং বিদ্যুৎ খেলাইতে পারে, ভারতের অশিক্ষিত আকাশ এমন এন্‌লাইটেণ্ড্ ছিল না।

 ভাই বাঙ্গালী, তুমি এন্‌লাইটেণ্ড্, বাতাসের সঙ্গে তুমি অনেক অক্সিজেন্ বাষ্প টানিয়া থাক এবং তােমার চোখে মুখে বিদ্যুৎ খেলে,