পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮
ব্যঙ্গকৌতুক

উঠিয়া সে কহিল, “তুমি কোথাকার অসভ্য হে!” আমি কহিলাম “বৎস, তুমিও যেখানকার আমিও সেখানকার!”—ছোঁড়াটা আমাদের নিম্নতন কুটুম্ব―আধপয়সা; কোথা হইতে পারা মাখিয়া আসিয়াছে।

 তাহার রকম-সকম দেখিয়া হাঃ হাঃ শব্দে হাসিয়া উঠিলাম।

 হাসির শব্দে জাগিয়া উঠিয়া দেখি, স্ত্রী পাশে শুইয়া কাঁদিতেছে। তৎক্ষণাৎ তাহার সঙ্গে ভাব করিয়া লইলাম। ঘটনাটা আদ্যোপান্ত বিবৃত করিয়া বলিলাম―বড়ো ধরা পড়িয়াছে! কিন্তু মনে করিতেছি আমিও কাল হইতে পারা মাখিয়া আপিসে যাইব।

 আমার স্ত্রী কহিল, তাহার অপেক্ষা পারা খাইয়া মরা ভালো।

  ১৩০০



কথামালার নূতন-প্রকাশিত গল্প

 একদা কয়েকজন কাঠুরিয়া এক পার্ব্বত্য সরল বৃক্ষের শাখাচ্ছেদনে মনোেযােগী হইয়াছিল। শ্রম লাঘব করিবার অভিপ্রায়ে বিস্তর পরামর্শ পূর্ব্বক তাহারা এক নূতন কৌশল অবলম্বন করিল। যে শাখা ছেদনের আবশ্যক, কয়েকজনে মিলিয়া তাহারই উপর চড়িয়া বসিল এবং নিভৃতে বসিয়া সতর্কতার সহিত অস্ত্রচালনা করতে লাগিল।

 যথাসময়ে শাখা ছিন্ন হইয়া পড়িল, এবং কাঠুরিয়া কয়েকটিও তৎসঙ্গে ভূতলে পড়িয়া পঞ্চত্ব প্রাপ্ত হইল।

 কাঠুরিয়ার সর্দ্দার এই সংবাদ শ্রবণে অধীর হইয়া সেই তরু সমীপে উপস্থিত হইল এবং কুঠার আস্ফালন করিয়া কহিল, “তুমি যে অপরাধ করিয়াছ আমি তাহার বিচার করিতে চাহি।”

 বনস্পতি সাতিশয় বিস্মিত হইয়া কহিল, “হে জনপুঙ্গব! আমার