পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বর্গীয় প্রহসন
৭১

 বৃহস্পতি। আমিও জননী বীণার অনুগমন করি! (প্রস্থান)

অশ্লেষা ও মঘার সভাপ্রবেশ

 অশ্লেষা ও মঘা (চন্দ্রের একাসনে শীতলাকে দেখিয়া) আজ অপরূপ অভিনব সপ্তদশম কলায় দেব শশধরকে সমধিকতর শোভমান দেখিতেছি!

 চন্দ্র। দেবীগণ, এই হতভাগ্যকে অকরুণ পরিহাসে বিড়ম্বিত করিবেন না। পুরুষরাহু আমাকে কেবল ক্ষণমাত্রকাল পরাভব করিতে পারে সেই আক্রোশে ঈর্ষান্বিত ভগবান একটি স্ত্রীরাহু সৃজন করিয়াছেন ইঁহার পূর্ণগ্রাস হইতে আমি বহু চেষ্টায় আপনাকে মুক্ত করিতে পারিতেছি না!

 অশ্লেষা। আর্য্যপুত্র, এই ভদ্র ললনা অনতিপূর্ব্বে তোমার অন্তঃপুরে প্রবেশপূর্ব্বক তোমার শ্বশুরকুলকে ঊর্দ্ধতন চতুর্দ্দশ পুরুষ পর্য্যন্ত অশ্রুতপূর্ব্ব কুৎসা দ্বারা লাঞ্ছিত করিয়া আসিয়াছেন। দেবীর সেই আশ্চর্য্য ব্যবহারকে আমরা অধিকারবহির্ভূত উপদ্রব জ্ঞান করিয়া বিস্ময়ান্বিত হইয়াছিলাম এক্ষণে স্পষ্ট বুঝিতে পারিতেছি সৌভাগ্যবতী তোমারই হস্তে সেই অবমাননের অধিকার প্রাপ্ত হইয়াছেন। এখন, আর্য্যপুত্রকে তাঁহার নবতর শ্বশুরকুলে বরণ করিয়া আমরা নক্ষত্রলোক হইতে বিচ্যুতিলাভের জন্য চলিলাম! (শীতলার প্রতি) ভদ্রে, কল্যাণি, তোমার সৌভাগ্য অক্ষয় হৌক্‌। (প্রস্থান)

শচীর প্রবেশ

 ইন্দ্র। (সসম্ভ্রমে আসন ত্যাগ করিয়া) আর্য্যে, শুভ আগমন হৌক্‌!

 ঘেঁটু। (উত্তরীয় ধরিয়া ইন্দ্রকে সবলে আসনে উপবেশন করাইয়া) ঈস্! ভারি খাতির যে! মাইরি; দাদা ঢের ঢের পুরুষ মানুষ দেখেচি কিন্তু তোর মতো এমন স্ত্রৈণ আমি দেখিনি!