পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
ব্যঙ্গকৌতুক

ফেলা যাক্! বলি গে, পাড়ায় প্লেগ্ দেখা দিয়েচে, ঊনপঞ্চাশ নম্বরে প্লেগ্‌হাসপাতাল ব’স্‌বে!

তৃতীয় অঙ্ক

আশু ও অন্নদা।

 অন্নদা। তােমার ঐ টাট্‌কা লঙ্কার ধোঁয়ায় নাকের জলে চোখের জলে ক’র্‌লে যে হে! তােমার ঘরে আসা ছাড়্‌তে হ’লাে!

 আশু। টাট্‌কা লঙ্কার ধোঁয়া তুমি কোথায় পেলে?

 অন্নদা। ঐ যে তোমার তর্কালঙ্কারের বকুনি! লােকটা তো বিস্তর টিকি নাড়্‌লে, মাথামুণ্ডু কিছু পেলে কি?

 আশু। মাথামুণ্ডু নইলে শুধু টিকি ন’ড়্‌বে কোথায়? কথাগুলাে যদি শ্রদ্ধা ক’রে শুন্‌তে, তবে বুঝ্‌তে।

 অন্নদা। যদি বুঝ্‌তেম, তবে শ্রদ্ধা ক’র্‌তেম! তুমি আশু ফিজিকাল্ সায়ান্সে এম্, এ, দিয়ে এলে—তুমি যে এতো ঘন ঘন টিকিনাড়া বরদাস্ত ক’র্‌চো, এ যদি দেখ্‌তে পায়, প্রেসিডেন্সি কলেজের চূমকাম-করা দেওয়ালগুলো বিনি খরচে লজ্জায় লাল হ’য়ে ওঠে। আজ কথাটা কী হ’লো বুঝিয়ে বলো দেখি।

 আশু। পণ্ডিতমশায় পরিণয়তত্ত্ব ব্যাখ্যা ক’র্‌ছিলেন।

 অন্নদা। তত্ত্বটা আমার জানা খুব দরকার হ’য়ে প’ড়েচে। তর্কালঙ্কার মশায় ব’ল্‌ছিলেন, বিবাহের পূর্ব্বে কন্যার সঙ্গে জানাশুনার চেষ্টা না করাই কর্ত্তব্য। যুক্তিটা কী দিচ্চিলেন, ভালাে বােঝা গেল না।

 আশু। তিনি বলছিলেন, সকল জিনিষের আরম্ভের মধ্যে একটা গােপনতা আছে। বীজ মাটির নীচে অন্ধকারের মধ্যে থাকে, তা’র পরে অঙ্কুরিত হ’লে তখন সূর্য-চন্দ্র-জল-বাতাসের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই কর্‌বার সময় আসে। বিবাহের পূর্ব্বে কন্যার হৃদয়কে বিলাতী অনুকরণে