বাইরে টানাটানি না ক’রে তাকে আচ্ছন্ন আবৃত রাখাই কর্ত্তব্য। তখন তা’র উপরে তাড়াতাড়ি দৃষ্টিক্ষেপ ক’র্তে যেয়াে না। সে যখন স্বভাবতই নিজে অঙ্কুরিত হ’য়ে তা’র অর্দ্ধমুকুলিত সলজ্জ দৃষ্টিটুকু গােপনে তােমার দিকে অগ্রসর কর্তে থাক্বে, তখনি তােমার অবসর।
অন্নদা। আমার অদৃষ্টে সে পরীক্ষা তাে হ’য়ে গেছে। বিলাতী প্রথামতে, বিবাহের পূর্ব্বে কন্যার হৃদয় নিয়ে টানাহেঁচ্ড়া করিনি;—হৃদয়টা এতো অন্ধকারের মধ্যে ছিল যে, আমি তা’র কোনাে খোঁজ পাইনি, তা’র পরে অঙ্কুরিত হ’লো কি না হ’লো, তা’রো তো কোনো ঠিকানা পেলেম না। এবারে উল্টোরকম পরীক্ষা ক’র্তে চ’লেছি, এবার আগে হৃদয়, তা’র পরে অন্য কথা!
আশু। পরীক্ষার দিন কবে?
অন্নদা। কাল।
আশু। স্থান?
অন্নদা। উনপঞ্চাশ নম্বর রাম বৈরাগীর গলি।
আশু। নম্বরটা তো ভালাে শােনাচ্চে না!
অন্নদা। কেন? উনপঞ্চাশ বায়ুর কথা ভাব্চো? সে আমাকে টলাতে পার্বে না—তুমি হ’লে বিপদ ঘ’ট্তো।
আশু। পাত্র?
অন্নদা। কন্যার বিধবা মা তা’কে পশ্চিম থেকে সঙ্গে ক’রে এনেচে। আমি ঘটককে ব’লে রেখেচি যে ভালো ক’রে মেয়েটির সঙ্গে পরিচয় ক’রে নিয়ে তবে বিবাহের কথা হবে।
আশু। কিন্তু অন্নদা, শেষকালে বহুবিবাহে প্রবৃত্ত হ’লে।
অন্নদা। তােমাদের মতাে আমি নাম দেখে ভড়্কাই নে। যে বহুবিবাহের মধ্যে আর সমস্ত আছে, কেবল বহুটুকুই নেই, তাকে দেখে চমকাও কেন ভাই।