পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
ব্যঙ্গকৌতুক

তাদের নিজের হাতে চুরট জ্বালিয়ে দিতে হয়—এ সব তো পার্‌বো না! ঘটক ব’ল্লে, ছেলেটি হ্যাট্‌কোট্ পরে! আমার মেয়ে আবার ফিরিঙ্গির সাজ দু-চক্ষে দেখ্‌তে পারে না! কী রকম যে হবে, বুঝ্‌তে পার্‌চি নে? মন্ত্র পড়ে বিয়ে ক’র্‌তে রাজি হবে তো?

ভৃত্যের প্রবেশ

 ভৃত্য। মা ঠাক্‌রুণ, একটি বাবু এসেচেন; আমি তাঁকে ব’ল্লেম বাড়িতে পুরুষমানুষ কেউ নেই। তিনি ব’ল্লেন, তিনি মার সঙ্গেই দেখা ক’র্‌তে এসেচেন।

 শ্যামা। তবে ঠিক হ’য়েচে। সেই ছেলেটি এসেচে। ডেকে নিয়ে আয়। (ভৃত্যের প্রস্থান) ভয় হ’চ্চে—ক’ল্‌কাতার ছেলে, তা’র সঙ্গে কী রকম করে চ’ল্‌তে হবে! কী জানোয়ারই মনে ক’র্‌বে।

আশুর প্রবেশ

(শ্যামাসুন্দরীর পায়ের কাছে একটি গিনি রাখিয়া

আশুর ভূমিষ্ঠ হইয়া প্রণাম।)

 শ্যামা। (স্বগত) এ যে প্রণামী দিয়ে প্রণাম ক’র্‌লে গো! এ তো শেক্‌হ্যাণ্ড করে না! বাঁচালে! লক্ষ্মী ছেলে! কেমন ধুতিচাদর প’রে এসেচে!

 আশু। মাতাজি, আমাকে যে আপনি দর্শন দেবেন, এ আমি আশা করিনি! বড়ো অনুগ্রহ ক’রেচেন।

 শ্যামা। (সস্নেহে সপুলকে) কেন বাবা, তুমি আমার ছেলের মতো, তোমাকে দেখা দিতে দোষ কী।

 আশু। স্নেহ রাখ্‌বেন। আশীর্ব্বাদ ক’র্‌বেন, এই অনুগ্রহ থেকে কখনো বঞ্চিত না হই।