পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বশীকরণ
৮৩

 শ্যামা। বাবা, তোমার কথা শুনে আমার কান জুড়ালো—আমি নিশ্চয় অনেক তপস্যা ক’রেছিলেম, তাই—

 আশু। মাতাজি, আপনি তপস্যার দ্বারা যে নিরুপম-সম্পদ্‌ লাভ ক’রেচেন, আমাকে তা’র—

 শ্যামা। তোমাকে দেবার জন্যেই তো প্রস্তুত হ’য়ে এসেছি। অনেক সন্ধান ক’রে যোগ্যপাত্র পেয়েচি—এখন দিতে পার্‌লেই তো নিশ্চিন্ত হই।

 আশু। (শ্যামার পদধূলি লইয়া) মাতাজি, আমাকে কৃতার্থ ক’র্‌লেন—এতো সহজেই যে ফললাভ ক’র্‌বো, এ আমি স্বপ্নেও জানতুম না।

 শ্যামা। বলো কী বাবা, তোমার আগ্রহ যতো, আমার আগ্রহ তা’র চেয়ে বেশি।

 আশু। তাহলে যে কামনা ক’রে এসেছিলেম, আজ কি তা’র কিছু পরিচয়—

 শ্যামা। পরিচয় হবে বৈ কি বাবা, আমার তা’তে কোনো আপত্তি নেই—

 আশু। আপত্তি নেই মাতাজি? শুনে বড়ো আরাম পেলেম—

 শ্যামা। দেখাশুনা সমস্তই হবে বাবা, আগে কিছু খেয়ে নাও!

 আশু। আবার খাওয়া! আপনি আমাকে যথার্থ জননীর মতোই স্নেহ দেখালেন।

 শ্যামা। তুমিও আমাকে মার মতোই দেখ্‌বে, এই আমার প্রাণের ইচ্ছা—আমার তো ছেলে নেই, তুমিই আমার ছেলের মতো থাক্‌বে।

আহার্য্য লইয়া ভৃত্যের প্রবেশ

 আশু। করেচেন কী? এতো আয়োজন?

 শ্যামা। আয়োজন আর কী ক’র্‌লেম? আজই ঠিক আস্‌তে পার্‌বে কি না, মনে একটু সন্দেহ ছিল, তাই―