পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বশীকরণ
৮৯

কেন। আপনাকে নিয়ে কি আমি পরিহাস ক’র্‌চি! আমার সে-রকম স্বভাব নয়। আমি এখনকার ছেলেদের মতো এ সকল বিষয় নিয়ে তামাসা করিনে!

 শ্যামা। তোমার আর মত বদ্‌লাবে না!

 আশু। কিছুতেই না! আপনার পদস্পর্শ ক’রে আমি ব’ল্‌চি, আপনার কাছ থেকে যা গ্রহণ ক’র্‌তে এসেচি, তা আমি গ্রহণ ক’রে, তবে নিরস্ত হবো।

 শ্যামা। দেওয়া থোওয়ার কথা কিছু হ’লো না যে!

 আশু। আপনি কী চান্ বলুন্।

 শ্যামা। আমি কী চাইবো বাবা! তুমি কী চাও, সেইটে বলো!

 আশু। আমি কেবল বিদ্যে চাই, আর কিছু চাই নে!

 শ্যামা। (স্বগত) ছেলেটি কিন্তু বেহায়া, তা ব’ল তেই হবে! ছি ছি ছি, বিদ্যেসুন্দরের কথা আমার কাছে পাড়্‌লে কী ক’রে? আমার নিরুকে বলে কি না বিদ্যে! (প্রকাশ্যে) তাহ’লে পানপাত্রটার কথা কী বলো বাবা!

 আশু। (স্বগত) পানপাত্র! এঁর দেখ্‌চি সমস্তই শাক্তমতে। এদিকে কুমারী কন্যা, তা’র পরে আবার পানপাত্র! এইটে আমার ভালো ঠেক্‌চে না! (প্রকাশ্যে) তা মাতাজি, আপনি কিছু মনে, ক’র্‌বেন না—অবশ্য যে কাজের যা অঙ্গ তা ক’র্‌তেই হয়। কিন্তু ঐ যে পানপাত্রের কথা ব’ল্লেন, ওটা আমার দ্বারা হবে না।

 শ্যামা। বাবা তোমরা এ কালের ছেলে, তোমরা ওটাকে অসভ্যতা মনে কর, কিন্তু আমি তো ওতে কোনো দোষ দেখিনে—

 আশু। আপনি ওতে কোনো দোষই দেখেন না? বলেন কী মাতাজি?

 শ্যামা। তা না হয় পানপাত্র রইলো, ওর জন্যে কিছু আট্‌কাবে না, এখন বিবাহের কথা তো পাকা?