পাতা:ব্যঙ্গকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
ব্যঙ্গকৌতুক

এখন আমি যাচ্চি―একঘণ্টার মধ্যে ফিরে আস্‌বো—আজকের দিনের মধ্যেই একটা সন্তোষজনক বন্দোবস্ত ক’র্‌বােই, এ আমি আপনার পা ছুঁয়ে শপথ ক’রে যাচ্চি।

 শ্যামা। বাবা, ও শপথে কাজ নেই—পা ছুঁয়ে আরাে একবার শপথ ক’রেছিলে—

 আশু। আচ্ছা, আমি আমার ইষ্টদেবতার শপথ ক’রে যাচ্চি, আজকের মধ্যেই সমস্ত পাকা ক’রে তবে অন্য কথা।

 শ্যামা। (স্বগত) ছেলেটি কথাবার্ত্তায় বেশ, কিন্তু ওকে কিছুই বুঝবার জো নেই! কখনো বা তাড়া দেয়, কখনো বা ঢিল দেয়, অথচ মুখ দেখে ওর প্রতি অবিশ্বাসও হয় না।

 আশু। তবে অনুমতি করেন তো এখন আসি!

 শ্যামা। তা এসাে বাবা। (প্রণাম করিয়া আশুর প্রস্থান)।

পঞ্চম অঙ্ক

অন্নদা

 অন্নদা। ব্যাপারখানা তো কিছুই বুঝতে পারলেম না। ঘটকের কথা শুনে এলেম কন্যা দেখতে। যিনি দেখা দিলেন, তাঁকে তো, বয়স দেখে কোনােমতেই কন্যার মা ব’লে মনে হয় না—চেহারা দেখে বােধ হলো অপ্সরী—যদিচ অপ্সরীর চেহারা কী রকম, পূর্ব্বে কখনাে দেখিনি। শেকহ্যাণ্ড ক’র্‌তে যেম্‌নি হাত বাড়িয়ে দিয়েচি, অমনি ফস ক’রে আমার হাতে কড়িবাঁধা একগাছি লাল সুতো বেঁধে দিলে। আর কেউ হ’লে গােলমাল ক’র্‌তেম—কিন্তু যে সুন্দর চেহারা, গােলমাল কর্‌বার জো কী। কিন্তু এ সমস্ত কোন্-দেশী দস্তুর, তা তত বুঝতে পার্‌চিনে।