পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১২৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১১৮
ভগ্নহৃদয়।

যেতে যেতে পথ মাঝে যদি হেরে ফুল
করতালি দিয়ে উঠে, তাড়াতাড়ি যায় ছুটে,
আনে তুলে, পরে চুলে, হেসেই আকুল!
কভু হেরি প্রজাপতি কৌতুহলে ব্যগ্র অতি
ধীরে ধীরে পা টিপিয়া যায় তার কাছে।
কভু কহে, “চল্ সখি সেই চাঁপা গাছে
আজিকে সকাল বেলা কুঁড়ি দেখেছিনু মেলা,
এতক্ষণে বুঝি তারা উঠিয়াছে ফুটে,
চল্ সখি একবার দেখে আসি ছুটে!”
কত না বিলম্ব পথে করিল এমন,
বড়ই অধীর হোয়ে উঠিল গো মন।
কতক্ষণ পরে শেষে গান গেয়ে হেসে হেসে
যেথা আমি বোসেছিনু আসিল সেথায়;
চলিয়া গেল সে যেন দেখেনি আমায়।
একেলা বসিয়া আমি রহিনু আঁধারে,
সমস্ত রজনী, সখি, সেই পথ ধারে।
কেন সখি, এত হাসি, এত কেন গান?
কিসের উল্লাসে এত পূর্ণ ছিল প্রাণ?
মন এক দলিবার আছেগো ক্ষমতা,
যখন তখন খুসী দিতে পারে ব্যথা,
তাই গর্ব্বে কোন দিকে ফিরেও না চায়?
তাই এত হাসি হাসে এত গান গায়?
কৃপান যে হাসি হাসে ঝলসি নয়ন,
বিদ্যুৎ যে হাসি হাসে অশনি-দশন!