পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
তৃতীয় সর্গ।
২৯

শূন্য বাতাসের পটে শত শত ছবি
মুছিতেছে, আঁকিতেছে—শতবার দেখিতেছে,
সেই এক মোহময় স্বপ্নময় কবি—
সদা যে বিহ্বল প্রাণে চাহিয়া আকাশ পানে,
আঁখি যার অনিমিষ আকাশের প্রায়,
মাটিতে চরণ তবু মাটিতে না চায়—
ভাবের আলোকে অন্ধ তারি পদতলে
অভাগিনী, লুটাইয়া পড়িলি কি বোলে?
সেকিরে, অবোধ মেয়ে, বারেক দেখিবে চেয়ে?
জানিতেও পারিবে না যাইবে সে চোলে,
যুঁথিকা-হৃদয় তোর ধূলি সাথে দোলে।
এত ভালবাসা তারে কেন দিলি হায়?
সাগর-উদ্দেশগামী তটিনীর পায়
ভাবিয়া না চিন্তিয়া যথা অবহেলে
ক্ষুদ্র নির্ঝরিণী দেয় আপনারে ঢেলে।
নিশীথের উদাসীন পথিক সমীর
শূন্য হৃদয়ের তাপে হইয়া অধীর,
কুসুম-কানন দিয়া যায় যবে কোয়ে,
আকুলা রজনীগন্ধা কথাটি না কোয়ে,
প্রাণের সুরভি সব দিয়া তার পায়,
পর দিন বৃন্ত হোতে ঝোরে পোড়ে যায়।
মেঘের দুঃস্বপ্নে মগ্ন দিনের মতন
কাঁদিয়া কাটিবে কিরে সারাটি যৌবন?
কেঁদে কেঁদে শ্রান্ত হোয়ে দীন অতিশয়—