পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
তৃতীয় সর্গ।
৩১

দেখি দেখি—কি যে দেখি, কি বলিব কি সে!
হৃদয় গলিয়া যায় জোছনায় মিশে।
জোছনার মত, সেই বিগলিত হিয়া
প্রাণের ভিতরে ধরি একবারে মগ্ন করি
কবিরে চৌদিকে যেন থাকে আবরিয়া।
মনে মনে মন যেন কাঁদিয়া দু’করে
কবির চরণ দুটি জড়াইয়া ধরে;
আঁখি মুদি “কবি—কবি” বলে শতবার,
শতবার কেঁদে বলে “আমার-আমার;”
“আমার আমার” যেন বলিতে বলিতে
চাহে মন একেবারে জীবন ত্যজিতে;
সুখেতে কি দুখে যেন ফেটে যায় বুক,
সুখ বলে দুখ আমি, দুখ বলে সুখ।
কোথা কবি কোথা আমি, সে যেগো দেবতা,
তারে কি কহিতে পারি প্রণয়ের কথা?
কবি যদি ভূলে কভু মোরে ভালবাসে
তা’ হোলে যে ম’রে যাব সঙ্কোচে উল্লাসে।
চাইনা, চাইনা আমি প্রণয় তাঁহার,
যাহা পাই তাই ভাল স্নেহ সুধা-ধার।
শুকতারা স্নেহ-মাখা করুণ নয়ানে
চেয়ে থাকে অস্তমান যামিনীর পানে,
তেমনি চাহেন যদি কবি স্নেহ ভরে
মুরলার ক্ষুদ্র এই হৃদয়ের পরে,
তাহা হোলে নয়নের সামনে তাঁহার