পাতা:ভগ্নহৃদয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৪৬
ভগ্নহৃদয়।

চূর্ণ চূর্ণ ভেঙ্গে আর ফেলিস্ না মন!
শিথিল কোরে দে তোর শতেক বন্ধন ডোর,
মুহূর্ত্তের তরে মুখ তুলি একবার;
বন্ধন-জর্জর মন শুধুরে মুহূর্ত্ত ক্ষণ
বাহিরে বাতাসে গিয়া বাঁচুক আবার!
অনিল।—আজি শুভদিনে ওকি অশ্রুবারি পাত? 
অশ্রুজলে কাটাবে কি ফুলশয্যা রাত?

(কাননের অপর পার্শ্বে অভিমান করিয়া বিজয়ের প্রতি) 
নলিনী।—মিছে বােলােনাকো মােরে ভালবাস’ ভালবাস’! 
নয়নেতে ঝরে বারি হৃদয়ে হৃদয়ে হাস’!
সারহীন—ভাবহীন দুটা লঘু কথা বোলে,
হেসে দুটা মিষ্টহাসি, দুই ফোঁটা অশ্রু ফেলে,
শূন্য রসিকতা করি দুই দণ্ড কাল হরি,
সরল-হৃদয় চাহ’ লভিবারে অবহেলে!
অবশেষে আড়ালেতে কহ হাসি হাসি কত
রমণীর ক্ষুদ্র মন লঘু তৃণটির মত!
ভালবাসা খেলা নয়, খেলেনা নহেগো হৃদি,
নারী বোলে, মন তার দলিতে সৃজেনি বিধি!
ভাল যদি বাস’, তবে ভালবাস’ প্রাণপণে—
ক্ষুদ্র মনে কোরে খেলা করিওনা মোর সনে!
হৃদয়ের অশ্রু ফেল’ দিবানিশি পদতলে,
মিছ হাসিওনা হাসি—কথা কহিওনা ছলে!
বিজয়।—কেন বালা, আমিত লাে দিনরাত্রি ভূলে