পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
৯৫

বর্ষার আয়োজন সমস্তই র’য়েচে কেবল আমি আসিনি বলেই বৃষ্টি আরম্ভ হয়নি। বর্ষার মেঘের ইচ্ছা ছিল, আমাকে তা’র কাজরী গান শুনিয়ে দেবে—তা’রপরে আমিও তাকে আমার গানে জবাব দেবো। তাই এতক্ষণ পরে আমি দুপুরবেলায় যখন খেয়ে এসে ব’স্‌লুম তখন বৃষ্টি শুরু ক’রে দিয়েচে এক মাঠ থেকে আর-এক মাঠে। আর তা’র কল-সঙ্গীতে আকাশে কোথাও যেন ফাঁক রইলো না। নববর্ষার জল-স্থলের আনন্দ-উৎসব দেখ্‌তে চাও তা হ’লে এসো আমাদের মাঠের ধারে, বসো এই জানলাটিতে চুপ ক’রে। পাহাড়ে বর্ষার চেহারা স্পষ্ট দেখ্‌বার জো নেই, সেখানে পাহাড়েতে মেঘেতে ঘেষাঘেঁষি মেশামেশি একাকার কাণ্ড। সমস্ত আকাশটা বুজে যায়; সৃষ্টিটা যেন সর্দ্দিতে, কাশীতে জবুস্থবু হ’য়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে প’ড়ে থাকে। পাহাড় আমার কেন ভালো লাগে না বলি,—সেখানে গেলে মনে হয়, আকাশটাকে যেন আড়-কোলা ক’রে ধ’রে একদল পাহারাওয়ালার হাতে জিম্মা ক’রে দেওয়া হ’য়েচে, সে একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা। আমরা মর্ত্ত্যবাসী মানুষ—সীমাহীন আকাশে আমরা মুক্তির রূপটী দেখ্‌তে পাই—সেই