কারণে দিগন্ত পার হ’য়ে ভেসে যেতে চায়। জানলার বাইরে মাঝে মাঝে যখন চোখ ফেরাই তখন মনে হয় যেন সুর-বালকেরা স্বর্গের পাঠশালা থেকে গুরুমহাশয়কে না ব’লে পালিয়ে এসেচে। আকাশের এ-কোণ ও-কোণ থেকে সবুজ পৃথিবীর দিকে তা’রা উঁকি মার্চে। হাওয়ায় হাওয়ায় তাদের কানাকানি শুনে আমার মনটাও উতলা হ’য়ে দৌড় মার্বার চেষ্টা কর্চে।
কিন্তু আমরা যে পৃথিবীর ভারাকর্ষণের টানে বাঁধা; মাটি আমাদের পা জড়িয়ে থাকে, কিছুতেই ছাড়্তে চায় না। অতএব মনের একটা ভাগ জানালার বাইরে দিয়ে যতই উড়্তে থাক্, আর-একটা ভাগ ডেস্কের সঙ্গে যুক্ত হ’য়ে পত্ররচনায় ব্যস্ত। দূরে কোথাও যদি যাবার ব্যবস্থা হয়, মনটাকে রেলভাড়ার কথা ভাব্তে হয়; দেবতার মতো শরতের মেঘের উপর চ’ড়ে মালতী-সুগন্ধী হাওয়ার হিল্লোলে বেণুবনের পাতায় পাতায় দোল খেয়ে খেয়ে বিনা ব্যয়ে ভ্রমণ ক’রে বেড়াতে পারে না। ইতি, ৩১ ভাদ্র, ১৩৩০।