পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
১৫৭

মুড়ি দিয়ে একবার চক্ষু বোজো, অনন্যগতি আমি তোমার আজন্মকালের অনুগত, আর আমরণ কালের সহচর, তাই ব’লেই কি আমাকে এত দুঃখ দিতে হবে? দেখ্‌চো না, পা দুটো কী রকম ঠাণ্ডা হ’য়ে এসেচে, আর মাথাটা হ’য়েচে গরম? বুঝ্‌চো না কি, এটা তোমার রাত্রিকালের উপযোগী মন্দাক্রান্তা ছন্দের যতি-ভঙ্গের লক্ষণ,—এ সময়ে মস্তিষ্কের মধ্যে শার্দ্দূলবিক্রীড়িতের অবতারণা করা কি প্রকৃতিস্থ লোকের কর্ম্ম?”—কায়ার এই অভিযোগ শুনে তা’র প্রতি অনুরক্ত আমার মন বলে উঠ্‌চে, “ঠিক্ ঠিক! একটুও অত্যুক্তি নেই।” ক্লান্ত দেহ এবং উদ্‌ভ্রান্ত মন উভয়ের সম্মিলিত এই বেদনাপূর্ণ আবেদনকে আর উপেক্ষা ক’র্‌তে পারিনে, অতএব চ’ল্‌লুম শুতে।

 প্রভাত হ’য়েচে। তুমি আমাকে বড়ো চিঠি লিখ্‌তে অনুরোধ ক’রেচো। সে-অনুরোধ পালন করা আমার সহজ-স্বভাব-সঙ্গত নয়, পল্লবিত ক’রে পত্র লেখার উৎসাহ আমার একটুও নেই। আমি কখনো মহাকাব্য লিখিনি ব’লে আমার স্বদেশী অনেক পাঠক আমাকে অবজ্ঞা ক’রে থাকেন,—মহাচিঠিও আমি সচরাচর লিখ্‌তে পারিনে। কিন্তু যেহেতু আমার চীনপ্রয়াণের