পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬
ভানুসিংহের পত্রাবলী

একটি কোনো গান হ’য়ে তা’র পরে আমাদের স্কুলের কাজ আরম্ভ হয়। ঠিক প্রথম ঘণ্টায় আমার ক্লাশ নেই। কিন্তু সেই সময়ে আমি আমার কোণটাতে এসে একবার আমার পড়াবার বই ও খাতাপত্র দেখে শুনে ঠিক ক’রে নিই—তা’রপরে আমার কাজ। এই আমার দিনরাতের হিসাব তোমার কাছে দিলুম। কেমন শান্তিতে দিন চ’লে যায়। ঐ ছেলেদের কাজ ক’র্‌তে আমার খুব ভালো লাগে। কেননা ওরা জানে যে, আমরা ওদের জন্য যে-কাজ করি তা’র কোনো মূল্য আছে। ওরা যেমন অনায়াসে সূর্য্যের কাছ থেকে তা’র আলো নেয় আমাদের হাত থেকে তেমনি অনায়াসে সেবা নেয়। হাটে দোকানদারদের কাছ থেকে যেমন দরদস্তুর ক’রে জিনিষ কিন্‌তে হয় তেমন ক’রে নয়। এরা যখন বড়ো হবে, যখন সংসাবের কাজে প্রবেশ ক’র্‌বে, তখন হয়তো মনে প’ড়্‌বে— এই আশ্রমের প্রান্তর, এখানকার শালের বীথিকা, এখানকার আকাশের উদার আলো এবং উন্মুক্ত সমীরণ এবং প্রতিদিন সকালে বিকালে এখানে আকাশতলে নীরবে ব’সে ঠাকুরকে প্রণাম। ইতি—১২ই শ্রাবণ, ১৩২৫।