পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
২৫

মধ্যে নিয়মের ফাঁক এতটুকুও নেই। কেমন জানো? যেমন একটি সহস্র-তারবাঁধা বীণাযন্ত্র। এই বীণার প্রত্যেক তারটি খুব খাঁটি হিসাব ক’রে বাঁধা, অর্থাৎ এই বীণাটির তুম্বী থেকে আরম্ভ ক’রে এর সূক্ষ্মতম তারটি পর্য্যন্ত সমস্তই সত্য। কিন্তু না-হয় সত্যই হ’লো, তাতে আমার কী! বীণার তার বাঁধার খাঁটি নিয়ম নিয়ে আমি কী ক’র্‌বো? তেমনি এই জগতে সূর্য্যচন্দ্রগ্রহ অণু-পরমাণু সমস্তই ঠিক সময় দেখে ঠিক নিয়ম রেখে চ’ল্‌চে—এই কথাটা যত বড়ো কথাই হোক্ না, কেবল তাতে আমাদের মন ভরে না। আমরা এই কথা বলি, শুধু বীণাব নিয়ম চাইনে, বীণার সঙ্গীত চাই। সঙ্গীত টি যখন শুন্‌তে পাই, তখনি ঐ বীণাযন্ত্রের শেষ অর্থটি পাই—তা নইলে ও কেবল খানিকটা কাঠ এবং পিতল। জগতের এই বীণাযন্ত্রে আমরা সঙ্গীতও শুনেচি; শুধু কেবল নিয়ম নয়। সকাল বেলার আলোতে আমরা শুধু কেবল মাটিজল, শুধু কেবল কতকগুলো জিনিষ দেখ্‌তে পাই, তা নয়। সকাল বেলার শান্তি, স্নিগ্ধতা, সৌন্দর্য্য, পবিত্রতা সে তো কেবল বস্তু নয়, সেই হ’চ্চে সকালের বীণাযন্ত্রের সঙ্গীত। তা’রই সুরে আমাদের হৃদয় পাখীর সঙ্গে