পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
ভানুসিংহের পত্রাবলী

মিলে গান গাইতে চায়। যেখানে বীণা শুধু বীণা, সেখানে সে বস্তুমাত্র—কিন্তু যেখানে বীণায় সঙ্গীত ওঠে, সেখানে বীণার পিছনে আমাদের ওস্তাদ্‌জি আছেন। সেই ওস্তাদ্‌জির আনন্দই গানের ভিতর দিয়ে আমাদের আনন্দ দেয়। সৃষ্টির বীণা তো ওস্তাদ্‌জি বাজিয়ে চ’লেচেন, কিন্তু আমাদের নিজের চিত্তের বীণাও যদি সুরে না বাজে তা’হলে আমাদের হৃদয়রীণার ওস্তাদজিকে চিন্‌বো কী ক’রে? তাঁব আনন্দরূপ দেখ্‌বো কী ক’রে? না যদি দেখি তাহ’লে কেবল বেসুর, কেবল ঝগড়া-বিবাদ, কেবল ঈর্ষা-বিদ্বেষ, কেবল কৃপণতা, স্বার্থপরতা, কেবল লোভ এবং ভোগের লালসা। আমাদের জীবনের মধ্যে যখন সঙ্গীত বাজে তখন নিজেকে ভুলে যাই। আমাদের জীবনযন্ত্রের ওস্তাদ্‌জিকেই দেখ্‌তে পাই। তখন দুঃখ আমাদের অভিভূত করে না, ক্ষতি আমাদের দরিদ্র ক’রে দেয় না, তখন ওস্তাদ্‌জির আনন্দের মধ্যে আমাদের জীবনের শেষ অর্থটি দেখ্‌তে পাই। সেইটি দেখ্‌তে পাওয়াই মুক্তি। সেইজন্যই তো চিত্তবীণায় সত্যসুরে তার বাঁধ্‌তে চাই, সেইজন্যে কঠিন চেষ্টায় মনকে বশ ক’র্‌তে চাই, চৈতন্যকে নির্ম্মল ক’রে তুল্‌তে চাই—সেইজন্যে নিজের স্বার্থ নিজের ক্ষুদ্র