পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
ভানুসিংহের পত্রাবলী

চ’ল্‌বে। কিন্তু ক্ষুদ্র প্রতিদিন যদি এমন কথা ব’লে বসে-যে, আমি যা পাই, যা আনি, সব আমি নিজে জমাবো, তা হ’লেই বিপদ বাধে,—কেন না, তা’র জমাবার জায়গা কোথায়? তা’র মধ্যে এত ধরে কোথায়? তা’র এমন অক্ষয় পাত্র আছে কোন্‌খানে? পৃথিবী যেমন তা’র সোনায়-ভরা সকালটিকে এবং সোনায়-ভরা সন্ধ্যাটিকে নিজে জমিয়ে রেখে দেয় না, পূজার স্বর্ণকমলের মতো আপন সূর্য্য-প্রদক্ষিণের পথে প্রত্যহ প্রণাম ক’রে উৎসর্গ ক’র্‌তে ক’র্‌তে চলেচে, আমাদেরও তেম্‌নি এই ক্ষুদ্র জীবনের সমস্ত সুখ-দুঃখ ভালোবাসাকে চিরদিনের চল্‌বার পথে চিরদিনের দেবতাকে উৎসর্গ ক’র্‌তে ক’র্‌তে যেতে হবে— তা হ’লেই ছোটো-আমির সঙ্গে বড়ো-আমির মিল হবে, তা’ হ’লেই আমাদের ক্ষুদ্র জীবন সার্থক হবে; আপনার দিকে সমস্ত টান্‌তে গেলেই সে-টান টেকে না, সেই বিদ্রোহে ছোটো-আমিকে একদিন পরাস্ত হ’তেই হয়। এইজন্য ছোটো-আমি জোড়হাতে প্রার্থনা ক’র্‌চে নমস্তেঽস্তু,— বড়োকে আমার নমস্কাব সত্য হোক্, নিজের ক্ষুদ্রতা থেকে মুক্তি পাই। ইতি ২৯শে ভাদ্র, ১৩২৫।