পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
৫৫

আমরা পুরাণো হ’য়ে উঠে নিজের হাজার রকম চিন্তায় এই পৃথিবীটাকে যতই জীর্ণ ক’রে দিই না কেন, মানুষ আবার ছেলেমানুষ হ’য়ে, নূতন হ’য়ে, চিরনূতন পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে। শুধু একদল মানুষ যদি চিরকালই বৃদ্ধ হ’তে হ’তে পৃথিবীতে বাস ক’র্‌তো, তা হ’লে বিধাতার এই পৃথিবী তাদের নস্যে, তামাকের ধোঁয়ায়, তাদের পাকা বুদ্ধির আওতায়, একেবারে আচ্ছন্ন হ’য়ে যেতো, স্বয়ং বিধাতা তাঁর নিজের সৃষ্টি ঐ পৃথিবীকে চিন্‌তে পার্‌তেন না। কিন্তু জগতে শিশুর ধারা কেবলি আস্‌চে। নবীন চোখ, নবীন স্পর্শ, নবীন আনন্দ ফিরে ফিরে মানুষের ঘরে অবতীর্ণ হ’চ্চে। তাই প্রাচীনদের অসাড়তার আবর্জ্জনা দিনে-দিনে, বারে-বারে, ধুয়ে-মুছে পৃথিবীর চিররহস্যময় নবীন রূপকে উজ্জ্বল ক’রে রাখ্‌চে। অন্য মানুষের সঙ্গে কবিদের তফাৎ কী, জানো? বিধাতার নিজের হাতে তৈরী শৈশব কবিদের মন থেকে কিছুতে ঘোচে না। কোনোদিন তাদের চোখ বুড়ো হয় না, মন বুড়ো হয় না। তাই চিরনবীন এই পৃথিবীর সঙ্গে তাদের চিরদিনের বন্ধুত্ব থেকে যায়, তাই চিরদিনই তা’রা ছোটোদের সমবয়সী হ’য়ে থাকে। সংসারে