পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
৫৯

তখন তো কাজ বন্ধ হয়, তখন তো আর গাণ্ডীব তুল্‌তে পারিনে। তাই জোয়ার ভাঁটার ছন্দকে জীবের মেনে চলা চাই। একবার আমি, একবার তুমি। সেই তুমিকে বাদ দিয়ে যখন মনে করি আমিই কর্ত্তা, তখনই জগতে মারামারি বেধে যায়—রক্তে ধরণী পঙ্কিল হ’য়ে ওঠে। মা তাঁর মেয়েকে ডেকে বলেন, সংসারের কাজে তুমি আমার সঙ্গে লেগে যাও, মেয়ে তখন কোমর বেঁধে লাগে, কিন্তু সে যখন ভুলে যায়-যে, এই কাজ তা’র মায়ের সংসারেরই কাজ, যখন অহঙ্কার ক’রে ভাবে ‘আমি যেমন ইচ্ছা তাই ক’র্‌বো’, তখন সে সংসারের ব্যবস্থাকে উলট্ পালট্ ক’রে জঞ্জাল জমিয়ে তোলে—অবশেষে এমন হয়-যে, মা ঝাঁটা হাতে নিয়ে সমস্ত আবর্জ্জনা ঝেঁটিয়ে ফেলেন। মেয়ের সেই কাজটুকুর উপরে ঝাঁটা পড়ে না—যখন সে-কাজ মায়ের সংসার-ব্যবস্থার সঙ্গে মেলে। সংসার-স্থিতির সঙ্গে এই-যে মিলিয়ে কাজ করা, এতে আমাদের যথেষ্ট স্বাধীনতা আছে—অর্থাৎ মিল বেখেও আমরা তা’র মধ্যে নিজের স্বাতন্ত্র্য রাখ্‌তে পারি—তাতেই সৃষ্টির বৈচিত্র্য। মেয়ের হাতের কাজটুকু মায়ের অভিপ্রায়কে প্রকাশ ক’রেও নিজেকে বিশিষ্টভাবে প্রকাশ ক’রতে