পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
ভানুসিংহের পত্রাবলী

টেবিলটা ঘিরেই বৈঠক হয়, সেখানে তর্ক হয় বিতর্ক হয় এবং মাঝে মাঝে গানও হ’য়ে থাকে। কারণ—আজকাল ফের আবার দুটি একটি ক’রে গান জ’ম্‌চে। সন্ধ্যার পরে সেই আমার কোণের বিছানায় তাকিয়া ঠেস্ দিয়ে কেরোসিনের আলোয় মৃদুমন্দস্বরে খাতা পেন সিল হাতে গান করি আর পশ্চিমের উন্মুক্ত বাতায়ন থেকে— তুমি ভাব্‌চো সেই বাতায়ন থেকে স্বর্গের অপ্সরীরা আমার গান শুন্‌তে আসেন—ঠিক তা নয়—সেই উন্মুক্ত বাতায়ন থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে কীটপতঙ্গ আস্‌তে থাকে,তাও যদি তারা আমার গান শুনে মুগ্ধ হ’য়ে আস্‌তো তা হলেও আমি মনে মনে একটু অহঙ্কার ক’র্‌তে পার্‌তুম,—তা’রা আসে ঐ ডীট্‌জ্ লণ্ঠনের কেরোসিন আলোটা লক্ষ্য ক’রে। উন্মুক্ত বাতায়ন থেকে হঠাৎ এক-একবার— আন্দাজ ক’রে বলো দেখি কী শুন্‌তে পাই? তুমি ভাব্‌চো, নক্ষত্র-লোক থেকে অনাহত বীণার অশ্রুত গীত-ধ্বনি? তা নয়;—এক সঙ্গে ভোঁদা, দানু, টম, রঞ্জু এবং এ মুল্লুকের যত দিশি কুকুরের তুমুল চীৎকার-শব্দ। যদি এরা আমার গান শুনে বাহবা দেবার জন্য এই আওয়াজ ক’র্‌তো তা হলেও বুঝ্‌তুম—কবির গানে চতুষ্পদ জন্তুরা পর্য্যন্ত