পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯২
ভানুসিংহের পত্রাবলী

পেবলেও রাজি আছি। আসল কথা, ক-দিন থেকে এখানে রীতিমতো খোট্টাই ফেশানের গরম প’ড়েচে। সমস্ত আকাশটা যেন তৃষ্ণার্ত্ত কুকুরের মত জিব বের ক’রে হাঃ-হাঃ ক’রে হাঁপাচ্চে। আর এই-যে দুপুরবেলাকার হাওয়া, এ-যে কী রকম—সে তোমাকে বেশি বোঝাতে হবে না—এই ব’ল্‌লেই বুঝবে-যে, এ প্রায় বেনারসি হাওয়া, আগুনের লক্‌লকে জরির সূতো দিয়ে আগাগোড়া ঠাস বুনোনি;—দিক-লক্ষ্মীরা প’রেচেন, তাঁরা দেবতার মেয়ে ব’লেই সইতে পারেন, কিন্তু ওর আঁচ্‌লা যখন মাঝে মাঝে উড়ে আমাদের গায়ে এসে পড়ে তখন নিজেকে মর্ত্ত্যের ছেলে ব’লেই খুব বুঝ্‌তে পারি। আমি কিন্তু আমার ঐ আকাশের ভানুদাদার দূতগুলিকে ভয় করিনে; এই দুপুরে দেখ্‌বে, ঘরে ঘরে দুয়ার বন্ধ কিন্তু আমার ঘরের সব দরজা-জান্‌লা খোলা। তপ্ত হাওয়া হু-হু ক’রে ঘরে ঢুকে আমাকে আগাগোড়া ঘ্রাণ ক’রে যাচ্চে,—এমনি তা’র ঘ্রাণ-যে, ঘ্রাণেন অর্দ্ধভোজনং। গরমের ঝাঁজে আকাশ ঝাপ্‌সা হয়ে আছে—কেমন যেন ঘোলা নীল—ঠিক যেন মূর্চ্ছিত মানুষের ঘোলা চোখ্‌টার মতো। সকলেই থেকে থেকে ব’লে ব’লে উঠ্‌চে, “উঃ, আঃ,—কী গরম!” আমি