পাতা:ভারতপথিক রামমোহন রায়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মানুষ সন্ধানী। আদিকাল হতে সে কেবল খুঁজে খুঁজেই বেড়িয়েছে। যখন তার সমস্ত চিত্তের উন্মেষ হয় নি তখনো সে আপনার সন্ধান-প্রবৃত্তিকে ক্রমাগত জাগিয়েছে। এই চলার পথে পরিশ্রান্ত হয়ে সে কতবার তার চার দিকে একটা গণ্ডি টেনে দিয়ে বলেছে— এই হল আমার গম্যস্থান, এখান থেকে আর এক পা’ও নড়ব না। অভ্যাস আর অনুষ্ঠানের বেড়া গড়ে তুলে নিজেকে বন্দী করে রেখেছে, যাতে তাকে আর সাধনা করতে না হয়, সন্ধান করে বেড়াতে না হয়। মন্ত্রকে খুঁটির মতো তৈরি করে সে তার চার দিকে কেবলই ঘানির বলদের মতো ঘুরেছে। পরিচিত কতকগুলো অভ্যাস অবলম্বন করে মানুষ আরাম চেয়েছে।

 কিন্তু মানুষ তো আরামের জীব নয়। স্থাণুর মতো স্থির হয়ে আপাতপরিতৃপ্তি নিয়ে সে যখন বসে থাকে তখন তার সেই আরামলোভী সমাজের মধ্যেই প্রকৃত মনুষ্যত্ব নিয়ে মহামানুষ জন্মায়। সে বলে— আমরা তো গহ্বরচর জীব নই, একটা নিত্যনিয়মিত গতিহারা রুদ্ধ জীবনের আহার বিহার ও আরাম নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে আমাদের চলবে না তো! মহাপুরুষ সাধনার পথকে স্বীকার করে নেন, সত্যকে সন্ধান করে তিনি সেই গভীরকে সেই অসীমকে উপলব্ধি করতে চান। সমস্ত ক্ষুদ্রতা ও তুচ্ছতার সীমা অতিক্রম করার জন্যে তিনি

৪৫