পাতা:ভারতপথিক রামমোহন রায়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একলার নয়। ঋষি একদিন বিশ্বকে বলেছিলেন, ‘পেয়েছি, জেনেছি, বেদাহং।’ ঋষি সেইসঙ্গেই বলেছেন, ‘আমার পাওয়া তোমাদের সকলের পাওয়া, শৃণ্বন্তু বিশ্বে।’ এই বাণীই উৎসবের বাণী। মানুষের উৎসবে চিরন্তন কালের আনন্দ ও আহ্বান।

 ঘরে যখন কোনো শুভ ঘটনা ঘটে, যেমন সন্তানের জন্ম বা বিবাহ, সেটাতেও আমাদের দেশের মানুষ সকলকে ডাকে; বলে, ‘আমার আনন্দে তোমরাও আনন্দ করো। আমার গৃহের উৎসব যখন বাইরে গিয়ে পৌঁছবে তখনি তা সম্পূর্ণ হবে।’ বস্তুত মানুষের ব্যক্তিগত শুভ ঘটনা, যা মানবসম্বন্ধের কোনোএকটি বিশেষ রূপকে প্রকাশ করে, যেমন জননীর সন্তানলাভ বা নরনারীর প্রেম-সম্মিলন, তাও একান্ত ব্যক্তিগত নয়; নবজাত শিশু বা নবদম্পতি শুধু মাত্র ঘরের না, তারা সমস্ত সমাজের। এইজন্যে গৃহের উৎসবকে সর্বজনের উৎসব যখন করি তখনি তা সার্থক হয়।

 আজকের উৎসবের বাণী হচ্ছে এই যে, সমস্ত মানবের হয়ে আমরা একটি ব্রত লাভ করেছি, ব্রতপতি আমাদের এই ব্রতকে সার্থক করুন। এ আমাদের মিলনের ব্রত। একটি মহৎ জীবনের ভিতর থেকে এই ব্রত উদ‍্ভাবিত— একজন মহামানব এর প্রতিষ্ঠা করে গেছেন, আমরা যেন একে গ্রহণ করি।

 মানুষ তার যে জীবনকে সহজে পেয়েছে সেই জীবনকে সৃষ্টি করার দ্বারা বিশিষ্টতা দিলে তবেই তাকে যথার্থ করে পায়। তা করতে গেলেই কোনো-একটি বড়ো সত্যকে আপন

৫১