জীবনচরিত পড়িয়া তাঁহাকে তাহা অপেক্ষা অনেক ছোট করিয়া জানিয়াছি মাত্র!
কৃত্রিম আদর্শে মানুষকে এইরূপ নির্বিবেক করিয়া তোলে। মেকী এবং খাঁটির এক দর হইয়া আসে। আমাদের দেশে আধুনিক কালে পাপ পুণ্যের আদর্শ কৃত্রিম হওয়াতে তাহার ফল কি হইয়াছে? ব্রাহ্মণের পায়ের ধূলা লওয়া এবং গঙ্গায় স্নান করাও পুণ্য, আবার অচৌর্য্য ও সত্যপরায়ণতা ও পুণ্য, কিন্তু কৃত্রিমের সহিত খাঁটি পুণ্যের কোন জাতিবিচার না থাকাতে, যে ব্যক্তি নিত্য গঙ্গাস্নান ও আচারপালন করে, সমাজে অলুব্ধ ও সত্যপরায়ণের অপেক্ষা তাহার পুণ্যের সম্মান কম নহে, বরঞ্চ বেশি। যে ব্যক্তি যবনের অন্ন খাইয়াছে, আর যে ব্যক্তি জাল মকদ্দমায় যবনের অন্নের উপায় অপহরণ করিয়াছে, উভয়েই পাপীর কোঠায় পড়ায় প্রথমোক্ত পাপীর প্রতি ঘৃণা ও দণ্ড যেন মাত্রায় বাড়িয়া উঠে।
য়ুরোপে তেমনি মাহাত্ম্যের মধ্যে জাতিবিচার উঠিয়া গেছে। যে ব্যক্তি ক্রিকেট্খেলায় শ্রেষ্ঠ, যে অভিনয়ে শ্রেষ্ঠ, যে দানে শ্রেষ্ঠ, যে সাধুতায় শ্রেষ্ঠ, সকলেই গ্রেট্ম্যান্। একই-জাতীয় সম্মানস্বর্গে সকলেরই সদগতি। ইহাতে ক্রমেই যেন ক্ষমতার অর্ঘ্য মাহাত্ম্যের অপেক্ষা বেশি দাঁড়াইয়াছে। দলের হাতে বিচারের ভার থাকিলে, এইরূপ ঘটাই অনিবার্য্য। যে আচারপরায়ণ, সে ধর্ম্মপরায়ণের সমান হইয়া দাঁড়ায়, এমন কি, বেশি হইয়া ওঠে; যে ক্ষমতাশালী, সে মহাত্মাদের সমান, এমন কি, তাঁহাদের চেয়ে বড় হইয়া দেখা দেয়। আমাদের সমাজে দলের লোকে যেমন আচারকে পূজ্য করিয়া ধর্ম্মকে খর্ব্ব করে, তেমনি য়ুরোপের সমাজে দলের লোকে, ক্ষমতাকে পূ্জ্য করিয়া মাহাত্ম্যকে ছোট করিয়া ফেলে।
যথার্থ ভক্তির উপর পূজায় ভার না দিয়া লোকারণ্যের উপর পূজার