পাতা:ভারতশিল্পে মূর্তি.djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



ভাব ও ভঙ্গি

 ভারতীয় মূর্তিগুলিতে সচরাচর চারি প্রকারের ভঙ্গি বা ভঙ্গ দৃষ্ট হয়, যথা— সমভঙ্গ বা সমপাদ, আভঙ্গ, ত্রিভঙ্গ এবং অতিভঙ্গ।

 সমভঙ্গ বা সমপাদ। এইরূপ মূর্তিতে মানসূত্র দেহকে বাম ও দক্ষিণ দুই সমান ভাগে বিভক্ত করিয়া মূর্তির শিরোদেশ হইতে নাভি, নাভি হইতে পাদমূল পর্যন্ত সরলভাবে লম্বিত হয় অর্থাং মূর্তিটি দুই পায়ের উপরে সোজাভাবে দেহ ও মস্তক বামে বা দক্ষিণে কিঞ্চিৎ-মাত্র না হেলাইয়া দণ্ডায়মান বা উপবিষ্ট রহে। বুদ্ধ, সূর্য এবং বিষ্ণুমূর্তির অধিকাংশ সমভঙ্গ ঠামে সমপাদ সূত্রনিপাতে গঠিত হয়। সমভঙ্গ মূর্তিতে দেহের বাম ও দক্ষিণ উভয় পার্শ্বের ভঙ্গি বা ভঙ্গ সমান রহে, কেবল হস্তের মুদ্রা পৃথক হয়।

 আভঙ্গ। এইরূপ মূর্তিতে মানসূত্র ব্রহ্মরণ্‌ধ্র হইতে নাসার ও নাভির বাম কিম্বা দক্ষিণ পার্শ্ব বহিয়া বাম কিম্বা দক্ষিণ পাদমূলে আসিয়া নিপতিত হয়, অর্থাং মূর্তির উধ্বদেহ মূর্তিরচয়িতার বামে (মূর্তির নিজের দক্ষিণে), কিম্বা মূর্তিরচয়িতার দক্ষিণে (মূর্তির নিজের বামে), হেলিয়া রহে। বোধিসত্ত্ব ও অধিকাংশ সাধুপুরুষগণের মূর্তি আভঙ্গ ঠামে গঠিত হইয় থাকে। আভঙ্গ ঠামে মূর্তির কটিদেশ মানসূত্র হইতে এক অংশ মাত্র বামে বা দক্ষিণে সরিয়া পড়ে।

 ত্রিভঙ্গ। এইরূপ মূর্তিতে মানসূত্র বাম অথবা দক্ষিণ চক্ষুতারকার মধ্যভাগ, বক্ষস্থলের মধ্যভাগ, নাভির বাম অথবা দক্ষিণ পার্শ্ব স্পর্শ করিয়া পাদমূলে আসিয়া নিপতিত হয়, অর্থাং মূর্তিটি মৃণালদণ্ডের মতো বা অগ্নিশিখার মতো পদতল হইতে কটিদেশ পর্যন্ত নিজের দক্ষিণে (শিল্পীর বামে), কটি হইতে কণ্ঠ পর্যন্ত নিজের বামে, এবং কণ্ঠ হইতে

২৭