পাতা:ভারতীয় স্মৃতি কথা ও চিত্র - সমরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মণ.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

I কৌশলী ১৭৫৯ উক্ত নৃপতির কালকবলে পতিত হওয়ার পর অবধি এই প্রদেশের আর কোন পরিষ্কার ইতিহাস প্রাপ্ত হওয়া যায় না। ভুবনবিখ্যাত পাণ্ডববংশধর নৃপতিগণের লব্ধপ্রতিষ্ঠ রাজধানী যে কৌশাম্বীপুরী একদা বহু হিন্দুদেবমন্দির, বৌদ্ধবিহার, তোরণাদিতে সুশোভিত রাজপ্রাসাদ ও বিপনি প্রভৃতিতে পরিপূর্ণ এক মহানগরী বলিয়া স্বপ্রসিদ্ধ ছিল; অধুনা একটা বিধ্বস্ত দুর্গ ও যৎসামান্য কয়েকটা নিকেতনাদির ংসাবশেষ ব্যতীত ইহার পূর্ব সমৃদ্ধির আর কোন নিদর্শনই বিদ্যমান নাই। কালের কুটিল বিবর্তনে সমস্তই ধ্বংসমুখে পতিত হইয়াছে। কৌশাম্বীর সেই ভগ্ন দুর্গমধ্যে প্রাগুক্ত সামান্য কয়েকটা নিকেতনাদির নষ্টাবশিষ্ট অংশ ব্যতিরেকে যে কতকগুলি ভগ্ন প্রস্তর মূৰ্ত্তি ও ইষ্টক রাশি ইহার পূর্ব গৌরবের স্মৃতিচিহ্লস্বরূপ বিকীর্ণ রহিয়াছে, তন্মধ্যস্থ একটা প্রস্তর ' নিৰ্ম্মিত বুদ্ধমূৰ্ত্তিই প্রখ্যাত। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, ইহার মুখ বিনষ্ট হইয়াছে। মুসলমান শাসনকালে তাহাদিগের দ্বারাই এরূপ হইয়াছে বলিয়া পল্লীনিবাসিগণ বলিয়া থাকে। এই প্রদেশ যবনগণের অধিকারভুক্ত হইলে অধুনাতন ‘কোসমৃ ইনামৃ” নামক গ্রামের মধ্যস্থিত হিন্দুরাজত্ব কালে নিৰ্ম্মিত দুইটা প্রাচীন ভবনের একটা মুসলমানগণ কর্তৃক মসজিদরূপে এবং অপরটা ইমামবাড়ারূপে পরিণত হইয়াছে। উক্ত দুইটা গৃহেরই বর্তমান অবস্থা অতি শোচনীয়। ইমামূবাড়ার ছাদ সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হইয়াছে। উক্ত দুইটা প্রাচীন ভবনের ভগ্নাবশেষ ব্যতিরেকে আর একটী অতি জীর্ণদশাগ্রস্ত ভগ্নগৃহ এই স্থানে আছে। পল্লীনিবাসী লোকেরা ইহাকে কবর বলিয়া নির্দেশ করে। কিন্তু এই সমাধি কাহার, ইহা বলিতে তাহারা অক্ষম। কৌশাম্বীর পূর্ববর্ণিত দুর্গের ধ্বংসাবশেষ হইতে নূ্যনাধিক চারি মাইল দূরে—“পাভোসা” নামে খ্যাত একটা পাষাণময় পৰ্ব্বত আছে। পভোগ তদগাত্রস্থ এক গুহাতে প্রকাণ্ডকায় এক নাগ বাস করিত বলিয়া চৈনেয় পৰ্ব্বত পরিব্রাজক ফাহিয়েন কর্তৃক লিখিত তদীয় ভ্রমণ বৃত্তান্তে উল্লেখ আছে।