পাতা:ভারতীয় স্মৃতি কথা ও চিত্র - সমরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মণ.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লাগার্জন পৰ্ব্বভ 、2、● নাগার্জন নামক বর্ণিত পর্বতমালায় অবস্থিত গুহানিচয় বহুকাল অবধিই হিন্দুধৰ্ম্মাবলম্বী যোগী ও সন্ন্যাসিগণ কর্তৃক অধিকৃত হইয়াছিল বলিয়া পরবর্তী কালের অত্রস্থ শিলালিপি হইতে মবগত হওয়া যায়। খৃষ্টীয় তৃতীয় কিংবা চতুর্থ শতাব্দীতে “শার্দুল বৰ্ম্মা’ ও ‘অনন্ত বৰ্ম্ম৷” নামক ব্রাহ্মণ্য ধৰ্ম্মে দীক্ষিত মধ্যদেশের (অধুনা যুক্তপ্রদেশ নামে খ্যাত) নৃপতিদ্বয় কর্তৃক খোদিত এই স্থানের তিনটী-গুহাগাত্রস্থ হিন্দু দেবমূৰ্ত্তি নিচয় এই বিষয়ের প্রমাণ আরও দৃঢ়ীভূত করে। কথিত আছে যে, খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষভাগে কিংবা সপ্তম শতাব্দীর প্রারম্ভ কালে যোগানন্দ নামক জনৈক হিন্দুধৰ্ম্মাবলম্বী সাধক এই পৰ্ব্বতে অবস্থান পূর্বক দৈত্যরাজ বাণের ন্যায় বরাবর পর্বতস্থিত সিদ্ধেশ্বরনাথ মহাদেবের তপস্যা করিয়াছিলেন। ইহার প্রকৃষ্ট প্রমাণ প্রাগুক্ত ‘বাপিকা” গুহাস্থ নিদর্শন হইতে প্রাপ্ত হওয়া গিয়াছে । বৌদ্ধযুগে ভুবন বিখ্যাত নৃপতি কণিঙ্কের প্রায় সমসাময়িক, সিদ্ধ নাগার্জন নামক রসায়ন শাস্ত্রে পারদর্শী জনৈক প্রসিদ্ধ পণ্ডিত ছিলেন। উক্ত শাস্ত্রে তাহার অসাধারণ ব্যুৎপত্তির সম্বন্ধে এইরূপ প্রবাদ প্রচলিত আছে যে, তিনি দ্রব্য-বিশেষ-সংযোগে তাম্রাদি ধাতুকে স্ববর্ণে পরিণত করিতে সক্ষম ছিলেন । এতদ্ব্যতিরেকে নানাবিধ রাসায়নিক দ্রব্য সম্মিলিত করিয়া এবংবিধ আশ্চৰ্য্য জীবনপ্রদ ঔষধ প্রস্তুত করিতে পারগ ছিলেন যে, তাহার প্রভাবে জরাগ্রস্ত বৃদ্ধ ও পুনর্যৌবন লাভ করিয়া শতাধিক বর্ষ জীবিত থাকিত । এই সমস্ত বিষয় সম্বন্ধে তৎকর্তৃক বিরচিত "সিদ্ধ নাগার্জন কক্ষপুট” নামক প্রসিদ্ধ গ্রন্থ অদ্যপি বর্তমান আছে। উক্ত স্বনামখ্যাত সিদ্ধ পুরুষ, একদা উল্লিখিত গুহ সমূদয়ের মধ্যস্থ কোন একটতে বাস করিয়াছিলেন ; এইজন্য বর্ণিত শৈলমালা তদীয় নামানুসারে “নাগাৰ্জ্জুন” নামে প্রসিদ্ধ হইয়াছে,— এইরূপ কিংবদন্তী প্রচলিত আছে ।