পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

و& ty আপনার স্বাৰ্থ বলি দিতে, আজ সে এতটুকু কাতর নয় । মুরমার জন্ত ছটা অfব পাড়িয়া দেওয়—সে ত সামান্ত ব্যাপার । তার জগু, সে আজ প্রাণ দিতে পারে । কিন্তু স্বরমা কি তার গভীর হৃদয়ের অগাধ অসীম ভালবাসার প্রতিদান দিবে! নাই দিকৃ— তবু ভালোবাসিয়াই ভবকাস্তের মুখ ! আহ, পরীক্ষার অন্তরালে, তাহার জন্ত, এমন স্বর্গের ঐশ্বৰ্য্য-ভাণ্ডার উন্মুক্ত ছিল, সে-ত কখনো স্বপ্নেও তাহ ভাবে নাই ! কিন্তু এই আম্রচুরি ব্যাপারটা একেবারে স্বার্থশূন্ত ছিল না । সরলা নারী-হউক বালিকা—তার সহিত আজ সে একটু ছলনা করিয়াছে! রণে প্রেমে সে ছলনাটুকু অবগু ক্ষমাই ! আম্রের লোভ দেখাইয়া স্বরমাকে সে বাগানে লইয়া যাইতে চায় । উপন্যাসে সে পড়িয়াছিল, সরোবরের মৰ্ম্মর সোপানে বসিয়া প্রেমিক-প্রেমিকার হৃদয়ের কথা ব্যক্ত করে ! চন্দ্র করোজ্জল নিশীথ, মাথার উপর তারকাখচিত, অনন্ত,নীল আকাশ, পদতলে সরোবরের কালে জল ! আহ, সেইত প্রেমাভিব্যক্তির পক্ষে, উপযুক্ত কাল, উপযুক্ত স্থান ! স্বরম নিতান্ত বালিকা-পল্লীগ্রামের অশিক্ষিত৷ বালিকামাত্র-নহিলে, তাতার জন্ত, সুরমা একছড়া মালাও কোনদিন গণথিয় দেয় নাই । যাই হোক, আজ সে নিজে চুপি চুপি বেল ও বকুল ফুল দিয়া দুই ছড়া মালা গাথিয়াছে ! পাছে গুথাইয়া যায়, এই ভয়ে, ডেক্সের মধ্যে এক বাটি জলেসে দুটি ভিজাইয়া রাখিয়াছে ! সেই মালার একগাছি সে আজ স্বরমার কণ্ঠে পরাইয়া দিবে—আর সুরমাও অপর গাছি তাহার কণ্ঠে পরাইয়া দিবে। নিকটেও পুষ্করিণী ছিল, গ্রামের নরনারী সন্ধ্যার সময় সেখানে বিরল হইলেও সে সকল পুষ্করিণীতে তালগাছের মূলই সোপানের স্থান অধিকার করিয়াছিল-নায়ক নায়িকার বলিবার মত উপযুক্ত স্থান ছিল না ! হালদার্ণির বাগান লোকালয়ের একটু ভারতী । বৈশাখ, ১৩১৭ দূরে । পুষ্করিণীর সোপান মৰ্ম্মর-রচিত না হইলেও, তথায় জীর্ণ ইষ্টক খণ্ডে বসিবার স্থান সংগ্ৰহ করিয়া লওয়া যাইত। সন্ধ্যার পর, কাগজের মধ্যে, মালা দুষ্টটি জড়াইয়া,ভৰকাস্ত হালদার্ণির বাগানে উপস্থিত হইল। সোপানের জীর্ণ ইষ্টকস্ত পে বসিয়া সে অধীর আবেগে নায়িকার আগমন প্রতীক্ষা করিতে লাগিল । ক্রমে সন্ধ্যা ঘনাইয়া আসিল । অন্ধকার গাঢ় হইয়া নামিল। জন প্রাণীর সাড়াশব্য নাই । স্তন্ধ বিজনতায়, ঝিল্লীর গভীর ধ্বনিতে ভবকাস্তের প্রাণটা শিহরিয়া উঠিতেছিল। আকাশে চাদ ছিল না ! আজি যে, কৃষ্ণ পক্ষের ত্রয়োদশী, অতিরিক্ত অধীরতায়, সেদিকে লক্ষ্য করিবার, ভবকাস্তের অবসরই মিলে নাই। চাদ উঠিবে না জানিলে, সে কখনই এ দুঃসাহসিক কার্য্যে অগ্রসর হইত না ! কঁাচা-মিঠা আস্ত্র পাড়িবার ত তার একটুও ইচ্ছা বা সাহস ছিল না—কেমন করিয়া সে এই আম-কঁঠালের ঝোপ পার হইয়া, চাপাগাছের তলা ঘূরিয়া, বাগান ছাড়িয়া গৃহে যাইবে, ইহা ভাবিয়া, সে আকুল হইয়া উঠিল । পুষ্করিণীর অপর পারে, গাছের ঝোপে, জোনাকি জলিতেছিল, ভৰকাস্তের মনে হইল, ওগুলা ভূতের চোখ জ্বলিতেছে ! তালগাছের পাতাগুলার মধ্যে বায়ু সে সে শব্দে গর্জিতেছিল, ভবকাস্ত ভাবিল, এ ভূতেরই নিশ্বাসের শঝ ! কি বিড়ম্বন । তার চোখ ফাটিয়া জল বাহির হইবার উপক্রম করিল । আর, মনে হইতেছিল কি পাপীয়গী, বিশ্বাসঘাতিনী, এই সুরমা ! অধীর প্রতীক্ষায়, এই অন্ধকারে, বাগানের মধ্যে, ভূতপ্রেতের অনুগ্রহের উপর নির্ভর করিয়া, সে বলিয়া —ভয়ে তার বুক স্থর ছুর করিতেছে, জিহব শুকাইয়া আসিয়াছে—জার, সেই পিশাচিনী সুরমা, নিশ্চিস্ত চিত্তে, হয়ত তার পিলিমার কাছে আবদার ধরিয়া গল্প শুনিতেছে । সে যদি কোন রাজপুত্র হইত ত, এখনি ঘোড়ায় চড়িয়া