পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা। অল্পই পরিবৰ্ত্তিত হইয়াছে। সেই ক্রমাতিসূচি আঁধারগর্ভ মন্দির, সেই এক আদর্শামুকারিণী মূৰ্ত্তি ! অত যে সিংহমূৰ্ত্তি,—যে যাহাকে সিংহ ন বলিয়া ডাগণ বলিলেই ঠিক হয়—সবগুলি এক ছাচে ঢালা । এই সেদিন ও, পুরীতে কোন মন্দিরের দ্বারদেশে আমরা দুটি সঙ্কনিৰ্ম্মিত সিংহমূৰ্ত্তি দেখিলাম--তাহা ও অবিকল সেই মান্ধী তার আমোলের সিংহমূৰ্ত্তির মত। শিল্পী যথাসাধ্য চেষ্টা করিয়াছে, যাহাতে এক চুল এদিক ওদিক না হয় । এখন বল, এমন দেশে তুমি ভিন্ন আদর্শের সন্ধান কোথায় পাইবে ? যদি মন্দিরের প্রস্তর পরীক্ষণপুৰ্ব্বক তুমি তাহা প্রাচীন বা আধুনিক, স্থির করিতে চেষ্টা করে, তাহা হইলে, বরং কৃতকার্ষ্য এবং যদি আদর্শ ও প্রাচীনত্বের দিক দিয়াই ধরা হয়, তাহা হইলে, তুমি বলিতে বাধ্য যে, কণারকের মন্দির,জগন্নাথের দেবায়তনের পরে, নিশ্চয় নিৰ্ম্মিত হইয়াছে । কারণ শিল্প যত পরিণত হয়, তাহা ততই উৎকর্ষের দিকে যায় ৷ কণারকে ইহার পরিচয় দীপ্যমান। ভুবনেশ্বর বা জগন্নাথ, কি উচ্চতায়, কি গঠনকৌশলে এবং কি স্বল্প শিল্পে-কণারকের সমকক্ষ নয়। পরস্তু, ফার গুসন সাহেব ত নিজেই স্বীকার করিয়াছেন, যে উড়িষ্যার অন্তtষ্ঠ মন্দিরের মত কণারকের ভিতরটা অন্ধকারে ঢাকা নয় । আমরা বলি কণারক যে অপেক্ষাকৃত আধুনিক,—ইহাই তাহার প্রধান প্রমাণ । ভুবনেশ্বরের অভ্যস্তর ভাগে }ষণ অন্ধকার—পরিস্কার দিবা-কালে ও স্থানে নজর চলে না—প্রতিপদেই হোচট ধাইয়া পড়িয়া যাইতে হয় । জগন্নাথের হইবে । কণারক । :J) মন্দিরেও অন্ধকারের অভাব নাই,–কিন্তু ভুবনেশ্বরের মত নয় । জগন্নাথের মন্দির ও আধুনিক । আর কণারকের মন্দির নিশ্চয়ই আরো আধুনিক, কারণ তথায় আলোকসমাগমের উপায় আছে। শিল্পীরা পুৰ্ব্বভিজ্ঞতায় বুঝিতে পারিল, যে আলোকের উপায় ন৷ করিলে, মন্দির অগম্য হইয় উঠে । ভুবনেশ্বর ও জগন্নাথের মন্দিরের দুরবস্থাই এই সাবধানতার কারণ । এই সকল দেখিয়া শুনিয়, বলিতে হয়, ভুবনেশ্বর জগন্নাথের মন্দিরের অপেক্ষ কণারক নিশ্চয়ই আধুনিক । বহুকাল পূৰ্ব্বে, আবুল ফজল অর্ক-মন্দির দেপিতে আসেন। তিনি ইহার সৌন্দর্য্যদর্শনে যেরূপ মুগ্ধ হইয়াছিলেন, তৎরচিত স্বৰ্য্য মন্দিরের কাহিনীই তাহার প্রমাণ । কিন্তু আবুল-ফজলও মন্দিরের সমগ্র সৌন্দর্য্য দর্শন করেন নাই । কণারকের তখন ভগ্নদশ। তিনি যে বিবরণ দিয়াছেন, তাহাতে জানা যায়, কণারকের সৰ্ব্বোচ্চ চুড়, জলদভেদী ছিল । যদিও, এই বর্ণনায়, কল্পনার অভাব নাই, তথাপি ইহা হইতে বেশ বুঝ৷ যায়, কণারক এত উচ্চচুড়সম্পন্ন ছিল, যে মেঘস্পশী না বলিলে, তাহার প্রকৃত স্বরূপ পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করিবে না। আবুল ফাজল অক-মন্দিরের একটা মোটামুটি বর্ণনাও, আপনার পুস্তকে লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন। তাহার একাংশ এইরূপ -- কণার ক মন্দিরের চারিদিকে উচ্চ প্রাচীর আছে । প্রাচীর, উচ্চতায় একশত পঞ্চাশ হাত এবং প্রস্থে উনিশ হাত । প্রবেশ করি বীর পথে একটি অষ্টকৌণিক স্তস্ত আছে, তাহ কৃষ্ণ প্রস্তর রচিত। (ইহাই অরুণ স্তম্ভ, এখন পুরাতে আছে ) নয়ট সিড়ি অতিক্রম করিলেই একট। মুক্তভূমিতে গিয়া পড়া যায়। সেখানে প্রস্তর এবং