পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা। সাগর তীরে । У об. সাগর তীরে। আমরা কুন্দ’ ও ‘কমলে’র দেশ ছাড়িয়া এখন ‘কপালকুণ্ডলা’র দেশে আসিলাম । এখানে প্রতিপদে লতা গুল্ম অন্তরালে স্মিত-মুখী কুমুমের সন্ধান পাওয়া যায় না ; তাহীদের স্থানে কণ্টকাকীর্ণ কেতকী। এখানে দখিণ-পবন* . গুপ্ত বাসনার মত মৃদ্ধ আসে না, এখানকার বাতাস নিৰ্ম্মম, কাপালিকের মত ভীষণ ! .সাগর ‘অজাগর গরজে সদা ফুলিছে । ইহা মরণের মত ভীষণ অথচ প্রশান্ত । কত নদী, কত জনপদ ধুইয়া কত মৃত্যু বহিয়া আনিতেছে ; কতকালের ধবংস সাগরগর্ভে সঞ্চিত হইতেছে । আবার সাগর গর্ভেই কত স্বষ্টি হইতেছে, মৃত্যুর সহিতই জীবন সংযুক্ত, দুই বুঝি একই ; সন্ধ্যা ত উষার মতই মনোরম ! সম্মুখে, এত অনন্ত অতল জলরাশি থাকিতেও গ্রাম্য বধূগণ জল লইতে আসে না ; তীরে স্বল্প হৃদয়া কূপেই তাহাদের সকল অভাব মিটে! অসীম ছাড়িয় সসীমের প্রতি মানবের অধিক আগ্রহ। সন্ধ্যার অন্ধকারে সাগর দেখিয়া সেই অতীতের প্রলয় দৃপ্ত আমার মনে পড়িল । তখন আমাদের শ্ৰীমতী ধরা এরূপ জলে স্থলে বিভক্ত হন নাই। তখন আকাশ ঘন কালে মেঘে আচ্ছন্ন, পৃথিবী এক বিশাল লবণাক্ত জলে মগ্ন। চন্দ্রসুৰ্য্যের দেখা প্রায় পাওয়া Iইত না মধ্যে মধ্যে আকাশের বিদ্যুৎ ও পৃথিবী গর্ভস্থ অগ্নি সেই ভীষণ আঁধার श्राप्गकिङ रुब्रिङ। बाबू औम थङझन, আবার আকাশ হইতে মুষলধারায় বৃষ্টি পড়িত। তাহার উপর ভূ-কম্পন! এমনি দুৰ্দ্দিনে জীবন প্রথম জন্ম লইল !—সে আজ কতকাল! তাহার পর কত যুগ-যুগান্তর ধরিয়া সেই জীবন মানুষ হইয়াছে। কিন্তু সে আর কতদূরে যাইবে—জীবন তরী কোথায় ভিড়িবে বলিয়া যাত্রা করিয়াছে—তাহা কে জানে ? ইহাও কি নিরুদেশ যাত্রা ? ভাবিতে ভাবিতে বাসায় ফিরিলাম । পরদিন অতি প্রত্যুষে আবার সাগর-তীরে উপস্থিত হইলাম। দেখিলাম পূৰ্ব্বদিগন্তে বধুর-নবলাজ-সম-রক্ত আভা ফুটিয়া উঠিতেছে। অপরিস্ফুট আলোকে আবৃত আৰ্দ্ৰ-সাগরতট সে আলো প্রতিফলিত করিতেছে। সাগর জল শুভ্ৰ-ফেৰ্ণ সমন্বিত নীলাভ হরিৎবর্ণ ; সাগরসস্থত জলবাষ্প তাহার উপর এক কুয়াসার আবরণ দিয়াছে ; বায়ু ও সাগর সুৰ্য্যোদয়ে নির্লিপ্ত,—তাহারা আপন কলকথায় ব্যস্ত । রক্তাভা ক্রমে ক্রমে উজ্জল হইয়া দিগন্ত গাঢ় রক্তিমবর্ণে উদ্ভাসিত করিল। লোহিতের ভিতর হইতে ক্রমশঃ পীতের আভা ফুটিয়া উঠিতেছে, রক্ত হইতে পাতের পরিণতি বড় সুন্দর বড় মনোহর ভাবে সম্পন্ন হইল। সাগর সেইরূপই কুয়াসা আবৃত নীলাম্বর । কেবল দিগন্তের ও তটের প্রতিফলিত অভি{ পরিবর্হিত ও পরিবদ্ধিত হইতেছে। আকাশে ধূমের মত মেঘসঞ্চার হইল। দিগন্ত এখন পীত, মেঘ এখন ধূসর, জল নীলমাখা হরিৎ, অীন্দ্র বেল আকাশের আলোক শতগুণ