পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা । আছেন, চতুর্দিকে আজ্ঞাবাহী দেব-নর অকুচরবর্গ দাড়াইয়া আছে। মদমত্ত বিরোচন তাহার উপস্থিতি লক্ষ্যই করিলেন না। ’ মুকেশী তাহাকে সাদর অভিবাদন করিবার জন্ত আসন ত্যাগ করিয়া দাড়াইলেন । সুধম্ব। বলিয়া উঠিলেন—“থাক্ থক্ মুন্দরী, ব্যস্ত হইবার আবশুক নাই। আমি রাজকুমার হইতে কিঞ্চিৎ দূরে ব্রাহ্মণের উপযুক্ত আসনই গ্রহণ করিব।” এতক্ষণে বিরোচনের যেন চেতন হইল । তিনি বলিলেন—“কে সুধন্বী যে ! এস, এস। তুমি আমার পাশে ব’সতে পারবে না তা জানি । তোমার বসবার জন্ত একখান! পিড়ি ও গাছকতক দর্ভ চাই। দাড়াও, অtনতে ব’লচি ৷” সুধম্বাকে অপমানিত করিবার জন্তই বিরোচন একথাগুলি বলিলেন এবং তাহার আশানুরূপ ফলও ফলিল। প্রহ্লাদ পুত্রের ঈদৃশ ব্যবহার দেখিয়া মুধন্বী বিস্মিত হইলেন, তাহার এরূপ অসদ্ব্যবহারের কোন কারণ ন বুঝিয়া বলিলেন—“তুমি এ কি করিতেছ বিরোচন ? এ প্রকারে আমাকে অপমানিত করিৰার অর্থ কি ? তোমার পিতাব ব্রাহ্মণের প্রতি সন্মান বোধ আছে, তুমি তাহার পুত্র হইয়া এরূপ কেন ?" বিরোচন ঘৃণার সহিত উত্তর করিলেন— “তুমি এ কজন সামান্ত ব্রাহ্মণ বই ত’ নয়, ভূমিতলে দর্ভাসনে বসিতে পার না ?” “তোমার মনে এতই অবজ্ঞার ভাব ? আমাকে অপমানিত করাতেই কি তোমার মহত্ত্ব ?” “আমি তোমাকে অপমানিত করি নাই । আমি তোমাকে তোমার যথাস্থান দেখাইয়া চয়ন—শক্তি ও সাধন । > @> দিয়াছি মাত্র । দৈত্যের শ্রেষ্ঠ জাতি, তাহার ব্ৰহ্মণের সহিত একাসনে বসিতে পারে না । তোমাকে তোমার যথাস্থানে থাকিতে হইবে।” সুধম্বা অবাক হইলেন । দৈত্যের বহুমূল্য আসনকে তিনি ঘুণ করেন। তাহার প্রিয়তমাকে দেখিবার নিমিত্ত তিনি তথায় উপস্থিত হইয়াছেন মাত্র। হায়, কোমলাকিশোরী আজ গৰ্ব্বোদ্ধত দৈত্যের কবলে । প্ৰহলাদপুত্র মোহে অন্ধ,—সে মোহ জঘন্ত অর্থের আর পাশব শক্তির । ঘূণায় তাহার অধরে ঈষৎ হাসি আসিয়া দেখা দিল । হালি দেখিয়া বিরোচন আরও ক্রুদ্ধ হইয়া বলি,লেন—“তুমি কি আমার কথায় সন্দেহ কর ?” “নিশ্চয়ই ! দৈত্যরাজপুত্র, তোমার গৰ্ব্ব মিথ্যা ।” সুধম্বার কণ্ঠস্বর ও বাক্যগুলি সহজ এবং সতেজ । “আমি আমার পদসম্পদ পণ রাখিয়া বলিতে পারি যে দৈত্যই শ্রেষ্ঠ ।” বিরোচনের মূৰ্ত্তি এতই উত্তেজিত যে সে সময়ে অন্ত কেহ তাহার কথার প্রতিবাদ করিতে সাহস করিত না । পূৰ্ব্বদিন তিনি দৈত্যের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করিবেন বলিয়া মুকেশীর নিকট প্রতিশ্রত হইয়াছিলেন ; সে তাহার প্রমাণ ভার সুধম্বার উপর দিয়াছিল । সুধম্বার উত্তরের প্রতীক্ষায় মুকেশী চাহিয়া রহিল। স্বধন্বা বলিলেন—“দৈত্যপুত্র, আমি তোমার রাজপদ বা সম্পদকে তৃণপেক্ষাও হীন জ্ঞান করি। যদি তোমার যথার্থই এরূপ শ্রেষ্ঠত্বে বিশ্বাস থাকে, তাছা হইলে জীবন পণ রাখিতে প্রস্তুত আছ কি ?” রাজকুমার বিরোচন একটু ইতস্ততঃ