পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Ꮌbre ( আত্ম-সন্মান ) বলিয়া যে জিনিসটি, তাহার সহিত কোনও সম্পর্ক. রাখে নাই। কারণ যে সব জিনিস সমপ্রকৃতির, তাহার ভিতর হইতে একটি বিশেষ জিনিসের পার্থক্য রক্ষা করা মুকঠিন । আত্ম-সন্মানের সঙ্গে আত্মাদরের একটা সাদৃপ্ত আছে, এই সাদৃশু-সঙ্কট এড়াইবার জন্ত, ভারতবর্ষের ধৰ্ম্মনীতি আত্মসম্মানকে দূরে রাখিয়া আসিয়াছে। ফল যখন পাকে, তখন আপনা হইতেই বোটা ছাড়িয়া পড়ে, পাকাইবার জন্ত তাহাকে বৃন্তহীন করিলে তাহা বিকৃতই হয়, পরিণত হয় না । এইরূপে চাষের প্রথম পত্তনে অহং-বৃত্তির সৰ্ব্ব-বিসারা গুল্ম উৎপাটিত করিয়া ভারতবর্ষ ধৰ্ম্ম-সাধনের ক্ষেত্র এমন সমতল করিয়া দিয়াছিল, যে কেহ তাহার দুয়ার হইতে নিরাশ হইয়া ফিরিয়া যায় নাই, প্রত্যেক জাতি, প্রত্যেক বর্ণ তাহার বিরাট রাজছত্রতলে একটা সুচারু শ্রেণীর ভিতর স্থান পাইয়াছে । ‘পৌত্তলিক’ বলিয়া ভারতবর্ষের একটা দুনাম আছে। বিরোধ জিনিসটা প্রধানতঃ সহানুভূতির অভাবেই উৎপন্ন হইয়া থাকে, দুর হইতে যাহারা অপযশ ঘোষণা করেন, র্তাহারা আপন অন্ধ অপ্রশস্ত অকুমানের দ্বারাই চালিত হন, সত্যের দ্বারা নহে। জননী যেমন আপনার রুগ্ন ও সুস্থ—দুৰ্ব্বল ও সবল সন্তানকে সমস্নেহে যোগ্য আহার বণ্টন করিয়া দেন, তেমনিভাবে ভারতবর্ষ তাহার যোগ্য ও অযোগ্য অধিকারী ভেদে ধৰ্ম্মকে সমতুল্য করিয়া সকলের কাছে বিভাগ করিয়া দিয়া ছিল। বিভিন্নমুখী শক্তি-সমুহকে এক সমতলক্ষেত্রে আনিয়া একটি মাত্র লক্ষ্যবেধের ভারতী। আষাঢ়, ১৩১৭ অক্ষমতার দ্বারা ভারগ্রস্ত করিয়া তোলে নাই । নিগুণ ধারণাতীত ব্ৰহ্ম, বলিতে যত সহজ ধ্যানে তত সহজ নয় ; অথচ এই পরাভক্তিকে বাদ দিয়া যে জীবন, ভারতবর্ষ কদাচ তাহার অমুমোদন করে নাই, ব্রহ্মবর্জিত যে মানব তাহার মানবত্ব কখনও সে স্বীকার করে নাই ! পদ্মপলাশলোচন হরিকে খুজিতে বাহির হইয়া, প্রহ্নাদ যেমন হিংস্র শ্বাপদের কণ্ঠলিঙ্গন করিয়াছিলেন, ভারতবর্ষ তেমনি তাহার অসীম আকুলতায় বিশ্বভুবনের দ্বারে লুষ্ঠিত হইয়াছে, শিলাখণ্ডের কাছেও কাদিয়া বলিয়াছে, “যে৷ দেবোইয়ে যেহেপ্‌ষ যে বিশ্বং ভূবনমাবিবেশ, য ওষধিযু যে বনস্পতিযু”—সেই তুমি ইহারও ভিতর অধিষ্ঠিত আছ! সে জড়কে শুধু জড় বলিয়া দেখে নাই, তাহার পশ্চাতে যে চিন্ময় মূৰ্ত্তি,যাহার বিভীতিতে এই নিখিল লোক বিভাত হইয়াছে, তাহাকে সৰ্ব্বাগ্রে দেখিয়াছে, তাই তাহার জড়-অজড়ের ভেদ ঘুচিয়া গিয়াছিল। কাজেই ভারতবর্ষকে যখন পৌত্তলিক বলা যায়, তখন তাহার দ্বারা কতখানি সত্য প্রচারিত করা হয়, তাহ বলা যায় না । ভারতবর্ষ ব্ৰহ্মকে বিশ্ব প্রকৃতির ভিতর দিয়া উপলব্ধি করিয়াছিল, আকাশে, বাতাসে, চন্দ্রে, সুৰ্য্যে, মৃত্তিকায়, শূন্তে—এই বিশ্বলোকের মাঝখানে সেই বিশ্বনাথকে অনুভব করিয়াছিল, যিনি "অরা ইব রথনভেী” ইহার ভিতর অধিষ্ঠিত আছেন । শিশু যেমন যাহা দেখে, তাছাকেই সচেতন বলিয়া মনে করে, তেমনি ভারতবর্ষ প্রভাতে জাগিয়া যখন এই বিচিত্র শক্তিশালিসী প্রকৃতিকে তাহার চোখের কাছে দেখিয়াছিল, তখন সে মুগ্ধ বিস্ময়ে তাহাতেই ঈশ্বরত্বের