পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/১৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা । অপর কাহাকেও আসিতে দেয় নাই । তাহার বিজন মিলন মন্দিরের অভিসার পথে তাহার মানস-বধূ অনন্তচিত্তের অখণ্ড অনুরাগ দীপ স্বরূপ জ্বালাইয়া গিয়াছে ! এই থানে প্রাচীন ভারতের গুরুবাদের একটা প্রশ্ন উথাপিত হইতে পারে,–কিন্তু বিজ্ঞানী ভারতবর্ষ জানিয়াছিল যে মানুষ নিরস্তর তাহার হৃদয়-দৌৰ্ব্বল্যের অধীন। এই বন্ধুর পিচ্ছিল পথে চলিতে গিয়া পাছে তাহার পদস্থলিত হইয়া পড়িয়া থাকিতে হয়, পাছে হকিকত রায় । δ9 (ζ তাহার আপন চোখের দৃষ্টি কম বলিয়া ঠিক গম্য পথটি দেখিয়া লইতে ভুল হয়, সংশয় যখন ঝড়ের বেগে আসিয়া পড়িবে, হাতের ক্ষীণ আলোটি অন্তরালের অভাবে পাছে নিভিয়া যায়—তাই সে শ্রেষ্ঠতর জ্ঞানের সাহায্য লইবার উপদেশ দিয়াছে ! প্রথম হাটিবার বেলায় শিশু যেমন জননীর অঙ্গুলি ধরিয়া হঁটিতে শেখে ঠিকৃ তেমনি ভাবে সে গুরূপদেশ গ্রহণ করিয়াছে-—খঞ্জের যষ্টির মত তাহাতে চির-নির্ভর স্থাপন করে নাই ! শ্ৰীমতী আমোদিনী ঘোষজায় । _. হকিকত রায় । পঞ্জাব প্রদেশে লাহোরের নিকটবৰ্ত্তী রাবিনদীর তীরে একটি অনতি বৃহৎ সমাধি রহিয়াছে। তথায় প্রতি বৎসর সরস্বতী পূজার দিন খুব সমারোহের সহিত একটি মেলা হইয়া থাকে। ঐ সমাধিটি একটি একাদশ বর্ষবয়স্ক বালকের -র্যাহার অসাধারণ সাহস, অটল প্রতিজ্ঞ, অপূৰ্ব্ব সহিষ্ণু ঠ ও স্বধৰ্ম্মনিষ্ঠা একদা সমস্ত ভারতবর্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছিল ; র্যাহার নাম স্মৃতিপথারূঢ় হইবামাত্র হৃদয় যুগপৎ ভক্তি, আনন্দ ও বিষাদে পূর্ণ হয় ; সেই ধীর প্রকৃতি স্থিরপ্রতিজ্ঞ কৰ্ত্তব্যনিষ্ঠ, স্বধৰ্ম্মপরায়ণ বালকের নাম হকি কত রায় । অগগর নামক একজন পঞ্জাবী কবির রচিত একটি গ্রাম্য-সংগীত পাঠে জানাযায় যে, হকিকত রায় ১৭৪৮ খৃষ্টাব্দে স্তালকোট নামক জনপদে জন্মগ্রহণ করেন । তাহার পিতার নাম ছিল লাল বাগমল । তিনি পুত্রকে সংস্কৃত ভাষায় বুৎপন্ন করিয়৷ পরে একমৌলবীর নিকট পারসী অধ্যয়নার্থ প্রেরণ করেন । শৈশব হইতেই হকি কতের ধর্মের প্রতি একটা প্রবল আমুরক্তি ছিল, তিনি স্বীয় মাতার নিকট রামায়ণ মহাভারত ও পুরাণাদির কথা শুনিতে খুবই ভাল বাদিতেন । হকিকত যে মৌলবীর নিকট পারসী পড়িতেন, একদিন তিনি কার্য্যোপলক্ষে স্থানান্তরে গিয়াছিলেন। সেই সময় সকল মুসলমানবালক মিলিত হইয়া হিন্দুদিগের ঠাকুর দেবতার প্রতি অসন্মান স্থচক নানাবিধ ঠাট্ট তামাসা করিতে লাগিল। স্বধৰ্ম্মপরায়ণ হকি কতের তাহ নিতান্ত অসহ্য বোধ হইল । তিনিও মহম্মদ এবং পৈগম্বর প্রভূতির নামে উপহাস করিলেন। ক্রমশঃ উভয়পক্ষে কলহ উপস্থিত হইল। যথা সময়ে মৌলবী প্রত্যাগমন করিলে মুসলমান বালকের তাহার নিকট হকি কতের বিরুদ্ধে নালিশ করিল।