পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা । অমঙ্গলের। আমি শান্তির বাপ হিসাবে স্বধু এ পরামর্শ চক্ষু লজ্জার খাতিরে দিচ্চিন । আপনার বন্ধু হিসাবেই বলচি এখন উইলের নামওঁ কৰ্ব্বেন না । এই অবসরে যদি হেম একটু মানুষ হয়ে উঠতে পারে সেই চেষ্টাই করুন। বোধ হয় ভগবান তারি রক্ষার জন্য এই শুভ মুহূৰ্ত্ত দান করলেন। —” শুiমাকান্ত দীর্ঘনিশ্বাস পরিত্যাগ করিলেন। “আমার অদৃষ্টে তা কি হবে, তারা আমার এমন দিন কি দেবেন । কিন্তু দেখো ভাই শেষটা আমি যেন আমার মার উপর অন্তীয় না করে ফেলি, যদি আমি হঠাৎ সরে যাই তা হলে আইন তো—”

  • আপনার নগদ টাকাও তো খুব অল্প নয়। ইচ্ছে করেন তো জমীদারি ভাগ না কবে ওদের সেইটেই দেবেন । কিন্তু এখন ওসব কথা থাক। হেমকে একটু খানি তার ভবিষ্যৎ ভাবলার অবসর দিন । না হলে জানবেন চৌধুরী মশায় আপনার সমুদয় জমাদারি ও বিষয় বিভব শাস্তির চোখের জল থামাতে

পাৰ্ব্বেনা ।” শু্যামাকান্ত শিহরিয়া বলিয়া উঠিলেন “তারা !” মনের জ্বালা মনে গোপন করিয়া, এই ঘটনাটাকে ছাটিয়া কাটিয়া রজনীনাথ বাড়ী ফিরিয়া বসুমতীকে যাহা জানাইলেন তাহার অর্থ এই যে, শুiমাকাস্তের শাস্তিকে অৰ্দ্ধেক সম্পত্তিদানে রজনীনাথই বাধা দিয়াছেন; কারণ আইনানুসারে যখন পোষ্যপুত্রের বধু এই সম্পত্তির অধিকারিণী নহে তখন তাহার কস্তা ইহা কেন লইবে ? বসুমতী এস্বার্থত্যাগের মহত্ব বুঝিলেন না। বিস্মিত ও পোষ্যপুত্র। సి(t দুঃখিত হইয়া বলিলেন, “তারপর মেয়েটা খাবে কি ? বিনোদের বউ যখন বিদায় করে দেবে ? হেমের তো ঐ বিদ্যে ।” রজনীনাথ বিদ্রুপ করিয়া বলিলেন “কেন তুমি মেয়েকে যে ঘরজামাই করতে চেয়েছিলে এরি মধ্যে ভয় হয়ে গেল পাছে দুদিন থেতে দিতে হয় ! দক্ষপিতার কথাই পড় গিয়েছিল মা এমন কৃপণ কখনও শুনা যায়নি!” পরে গম্ভীর মুখে কহিলেন “হেম একটু মানুষ হোকনা। কেন তাতে তোমরা সকলেই বাধা দিতে চাও? জেনো বসু, ঈশ্বর যা করেন সবি ভালর জন্য। কারণ চৌধুরী যদি হেমকে সত্য সত্যই বিষয় থেকে বঞ্চিত করতে পারতেন তা হলেই হেমের পক্ষে সবচেয়ে মঙ্গল হতে । আর আমার লতিটার ও বড় উপকার হতো। গরীবের স্ত্রীর আদর থাকে বনু । বড়লোকের স্ত্রী হওনি তাই বুঝতে পারবেন তারা কি আগুন হারের জ্যোতিতে লুকিয়ে রাপতে চেষ্টা করে। ভগবান আমার মেয়েকে তাদের দল থেকে রক্ষা করুন ।” ঠিক মনের সহিত না মিলিলেও বসুমতী চুপ করিয়া রহিলেন, স্বামীর মতের বিরুদ্ধ মনোভাবকে প্রশ্রয় দিতে তিনি সাহসী হইতেন না। জামাতার দারিদ্র্য লাভের আশীৰ্ব্বাদটা কিন্তু কিছুতেই তাহার মনঃপুত হইল না ; মনে মনে শাস্তিকে রাজরাণী হইবার জন্ত পুনঃ পুনঃ আশীৰ্ব্বাদ করিতে লাগিলেন। রাস্তায় একটা গোলমাল ও সেই সঙ্গে ফটকের মধ্যে একথান গাড়ি জোরে প্রবেশ করিবার শব্দ উভয়কেই সেইদিকে আকৃষ্ট করিল। সম্মুখের দেয়ালের উপর একটা ঘড়ি নিজের কাজে ব্যস্ত ছিল,