পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S е е মুখে হাসি নাই, চোখের দৃষ্টি নত, মুখ এমন স্নান যে পূৰ্ব্বে কখনও এ রকম সে দেখে নাই। মৃত্ন অনিচ্ছুক পদে সে চলিয়া গেল ; কিন্তু পাশের ঘর হইতে তাহার রোদনের ফোপানির শব্দ আসিতে কোন বাধা পাইল না। এবার শাস্তি হঠাৎ উঠিয়া দাড়াইল, মুখ তুলিয়া দৃঢ়ভাবে সে পিতার দিকে চাহিয়া বলিল “বাবা অার কারু সঙ্গে আমায় তাহলে লক্ষ্মীপুরে পাঠিয়ে দিন, নাহলে” হেমেন্দ্রের সহিত পথে বাহির হইবার সাহস তাহার নাই একথা সে পুনঃ পুনঃ চেষ্টা করিয়াও বলিতে পারিতেছিল না । স্বামীকে পিতার চক্ষে মসিবর্ণে রঞ্জিত করিয়া তুলিতে কষ্টের চেয়ে লজ্জা অনেকখানি বেশি ছিল । তা ভিন্ন সে স্বামীকে এইটুকু পৰ্য্যন্ত বিশ্বাস করে না দেখিয় তাহার পিতাই বা কি মনে করিবেন ? তাই সে তাহার মনের আতঙ্ক স্পষ্ট করিয়া প্রকাশ করিতে না পারিয়া কথাটা অসমাপ্ত থাকিতেই মাথা নীচু করিল। রজনীনাথ একটু চঞ্চল হইয়া বলিয়া উঠিলেন, “তাকি হয়, হেমও ফিরে যাক। দোষ সত্যি সত্যি ওরিই তো ! ওকে তার কাছে ক্ষম চাইতে হবে। দেখ মা অনেকখানি ভেবে চলতে হয়—” “জামাই বাবু বলচেন যেতে হয়তো এই চারটের টেরেণে যাওয়াই সুবিধে”। এই বলিয়া মোক্ষদা গৃহে প্রবেশ করিল। বসুমতী ধড়মড়িয়া উঠিয়া পড়িয়া তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিলেন “সে আবার কি কথা ! যেতে হয় বিকেলে যাবে, এই রাত্তিরে না খাওয়া না ঘুমন, এখন কোথায় যাবে ? যাতে রে শিগ্যির করে তোলা উনানটা ধরিয়ে চাটি ময়দা মাংগে, বামুনদিকেও উঠিয়ে छांब्रडौ। আষাঢ়, ১৩১৭ দিগে, আমিও যাচ্ছি। কপির একটা ডাল্লা আর খানকতক আলু বেগুন ভাজ কুটিস্। আর কিছু কাজ নেই অনেক দেরি হয়ে যাবে।” মোক্ষদা চলিয়া গেল ও একটু পরেই ফিরিয়া আসিয়া বলিল “জামাইবাবু বল্লেন এই ভোর রাত্তিরে কি খাওয়া যায়, মাকে ওসব করতে বারণ কর। এই টেরেণে যেতেই হবে। আবার কাল নাহোক পরশু তিনি এইখানেই তো আসচেন, দেরি হলে মিথ্যে একটা লোক জানাজানি হবে বৈতো নয়—” জামাতার মুমতি দেখিয় রজনীনাথের মুখের কঠিনভাব অনেকটা কমিয়া আসিল । হেমেন্দ্র তবে নিজের অন্তায়টা বুঝিতে পারিয়াছে ! শাস্তির একটু কাছে আসিয়া বলিলেন “তবে সেই ভাল, দেরি করে তাহলে অার কাজ নেই । শাস্তি এবার যেন তোমায় তুচ্ছ বিষয়ে কৰ্ত্তব্য ত্যাগ করতে না দেখি,”—শান্তি মাটিতে পিতামাতার পায়ের কাছে প্রণাম করিয়া উঠিয়া দাড়াইল, বসুমতী তাহাকে দুইহাতে বুকে চাপিয়া ধরিয়া কপালে চুম্বন করিলেন, রজনীনাথ মুখ ফিরাইয় একমুহূর্ত দাড়াইয়া থাকিয়া খাটের পিছনের জানলাটা খুলিবার জন্ত চলিয়া গেলেন। মাহুত যেমন করিয়া অনিচ্ছুক হস্তীকে অস্কুশাঘাতে ফিরায় তেমনি করিয়া প্রযল ইচ্ছাকে তাহার রোধ করিতে হইল । শান্তি মায়ের বুকে একবারটি মাথা রাখিয়া একমুহূৰ্ত্তকাল স্থিরদৃষ্টিতে র্তাহার আরক্ত মুখের পানে চাহিয়া দেখিল, তারপর আস্তে অস্তে সেই স্নেহ বন্ধন হইতে আপনাকে মুক্ত করিয়া লইয়া সকালবেলাকার স্নান