পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা। লাগিলেন । কিরূপে মানব হৃদয়ের উচ্চতর ভাবগুলি ছাত্রদিগের মনে অঙ্কুরিত করিয়া দিবেন এই চিন্তায় তিনি অহরহ রত থাকিতেন। - ছাত্রদিগকে অtয়ত্ত্বাধীন করিবার নিমিত্ত তিনি তাহীদের সহিত মিশিতেন, তাহদের ক্রীড়াকৌতুকে যোগ দিতেন, নাম, ধৰ্ম্ম, অভিভাবকের অবস্থা ইত্যাদি প্রত্যেক খবরটি তাহার ওষ্ঠাগ্রে থাকি ত । গুরু ডিরোজির ও দ্যায় সন্ধ্যাকালে ছাত্রগণ পরিবৃত হইয়া ধৰ্ম্ম নীতি ও অন্তান্ত প্রয়োজনীর বিষয়ের আলোচনা করিতেন । এইরূপে ছাত্রছদয় সম্পূর্ণরূপে জয় করিয়া তিনি তাহাদিগকে ক্রীড়া পুত্তলিকার স্থায় চালিত করিতেন । যখন কোন শ্রেণীতে ছাত্ৰগণ চাঞ্চল্য প্রকাশ করিয়া অধ্যাপনার ব্যাঘাত ঘটাইত, রামতনুবাবুর উপস্থিতি সে স্থলে নিমেষে শৃঙ্খলা ও শান্তি পুরানয়ন করত । ছাত্রেরা তাহার সন্তানের দ্যায় ছিল যাহতে তাহাদের শিক্ষা সৰ্ব্বাঙ্গীণ হয়, এবং তাহার আপনার ও সমাজের কল্যাণ সাধন করিতে পারে, সে বিষয়ে রামতনুবাবুর প্রখর দৃষ্টি ছিল । ছাত্রজীবন যে বালকের সাংসারিক উন্নতি বা অবনতির সোপান এই কথাটি তিনি এমন গভীরভাবে বালকদিগের হৃদয়ে মুদ্রিত করিয়া দিতেন যে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ভtহার তাহার উপদেশ ভুলিতে পারিত না । স্বাবলম্বন ও যত্বের দ্বারা প্রত্যেক ছাত্রই আপনার এবং দেশের অশেষ উপকার করিতে পারেন, রামতমুবাবুর এই উপদেশটি উত্তর কালে অদ্ভুত ফলপ্রস্থ হইয়াছিল । আদর্শ শিক্ষকরূপে রামতনুবাবু চিরকাল বাঙ্গালীর হৃদয়ে উচ্চ স্থান অধিকার করিয়া রামতনু লাহিড়ী। २०१ থাকিবেন । সরল ও চিত্তাকর্ষক করিয়া বুঝাইবার শক্তি র্তাহার স্বভাবসিদ্ধ ছিল। শিশুশিক্ষা সম্বন্ধে সম্প্রতি যে Kindergarten বা বস্তুশিক্ষা পদ্ধতি প্রচলিত হইয়াছে, অৰ্দ্ধশতাব্দীর পূৰ্ব্বেও রামতনুবাবুব তাহা অগোচর ছিল না। ছাত্রদিগের সৌন্দর্য্যশক্তির উন্মেষের So fossa Milton, Burns, Campbell প্রভৃতি ইংরাজ কবিগণের গ্রন্থ হইতে স্থানবিশেষ আকৃত্তি করিতেন । র্তাহার পাঠের ঐকাস্তিকতা ও তন্ময়ত দৃষ্ট্রে ছাত্রেরাও আত্মহারা হইয়া যাইত। শিক্ষক জীবনের সফলতার অন্তরালে তাহার প্রবল জ্ঞান পৃহা উল্লেখযোগ্য। শিক্ষণীয় বিষয়গুলি তিনি গৃহে পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে অধ্যয়ন করিয়া বিদ্যালয়ে যাইতেন । তিনি পড়াইতেন অল্প, কিন্তু অধীত অংশগুলি সম্বন্ধে ছাত্রগণ সম্পূর্ণ নিশ্চিস্ত থাকিত। যদি কোন ছাত্র তাহার অপেক্ষ উৎকৃষ্টতর ব্যাখ্যা করিতে পারিত, কিম্বা তাহার ভ্রম প্রদর্শন করিতে পারিত, তিনি অতিশয় আনন্দের সহিত ছাত্র সমক্ষে আপন ক্রটি স্বীকার করিতেন। ছাত্রদিগের অদ্ভুত গুরুভক্তি র্ত:হার শিক্ষকতায় সাফল্য লাভের সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট প্রমাণ। যে কেহ তাহার উজ্জ্বল চরিত্রের সংস্পর্শে আসিয়াছিলেন সকলেই মুক্ত কণ্ঠে স্বগীয় গুরুর গুণাবলী ঘোষণা করিয়াছেন । রামতনু অসামান্ত আদর্শচরিত্রবলেই ছাত্ৰগণের নিকট পুত্ৰোচিত ব্যবহার পাইয়াছিলেন । এ সম্বন্ধে উত্তরপাড়ার পণ্ডিতাগ্রগণ্য রাজা প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায় ও স্বগীয় কালীচরণ ঘোষের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ যোগ্য । ১৮৫১ খৃষ্টাব্দে ১৫৭ টাকা ৰেতনে