পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা । না করেন । শিক্ষণ সমাপ্তির পর কোন প্রবাসী ভারতে প্রত্যাবর্তন কালে আস্তান্ত ভারতীয় ছাত্ৰগণ যখন ষ্টেশনে তাহাকে বিদায় দিতে যান তখন প্রত্যেকেরই সেই জাহাজে उठांब्रडक्षां द्वtनि श्क् श्न । সেই বিদেশে যে কোন অশিক্ষিত ভারতবাসীকে পাইলেও কত আনন্দ । আমাদের একট প্রবচন আছে যে “দেশের কুকুর আর বিদেশের ঠাকুর” সমান । এই জন্তই জাহাজে অন্তান্ত দেশীয় শিক্ষিত আরোহীদিগকে উপেক্ষা করিয়া ভারতীয় অশিক্ষিত খালাসীদের সহিত আলাপ করিতেও ঔৎসুক্য জন্মে। আমাদের জাহাজ সাজঘাই বন্দরে পৌছিলেই তীরে একজন ভীমমূৰ্ত্তি শিখ প্রহরীকে দেখিয়া তাহার সহিত অ{লাপ করিতে ইচ্ছা হইল। নামিবার কিঞ্চিৎ পূর্বেই দেখিতে পাইলাম যে সেই প্রহরী একজন নির্দোষ চীনা রিকৃশওয়ালাকে নির্দয় ভাবে প্রহার করিতেছে। কাযেই তাহার সহিত আলাপের আর প্রবৃত্তি রহিল না। সহরে চুকিলাম । স্থানে স্থানে সহরের রাস্তায় এবং বড় বড় বৈদেশিকের কুঠীর দ্বারদেশে সবলকাল এক এক হিন্দুস্থানী দাড়াইয়া রহিয়াছে। আগ্রহের সহিত প্রত্যেকের নিকট গিয়া দুই এক কথা জিজ্ঞাসা করিলাম। প্রায় সকলকেই জিজ্ঞাস করিয়াছিলাম—ভাই হিন্দুস্থানের কোন প্রদেশে তোমার বাড়ী ? কত দিন এখানে আছ ? আহারাদি বাদে দেশে কিছু পাঠাইতে পার কি ? ইত্যাদি। বলাবাহুল্য দুই একজন বাদে সকলেই গরম মেজাজে এবং তুচ্ছ জ্ঞানে উত্তর দিয়াছিল । একজন কোটপেণ্টলুন এবং টুপী প্রবাসী । 3 > は পরিহিত হিন্দুস্থানীকে মিউনিসিপাল বাগানে উপবিষ্ট দেখিয়া তাহার নিকট গিয়া ঘে সিয়া বসিলাম । কথাবার্তায় জানিতে পারিলাম সে জনৈক বৈদেশিকের দরোয়ান, ইংরাজী কিম্বা হিন্দি লিখিতে পড়িতে কিছুই জানে না, একেবারে নিরক্ষর । তাহার প্রভু প্রদত্ত পরিচ্ছদে ভূষিত হইয়া রবিবারের অবকাশ সময় টুকু বাগানে হাওয়া খাওয়ার জন্ত বাহির হইয়াছে। লোকটী ছয় বৎসর সাজঘাই সহরে আছে । অথচ সহরের কোন খবরই সে দিতে পারিল না, যেহেতু সে নাকি তাহার কার্য্যস্থল আর ঐ বাগান ছাড়া উত্তর দক্ষিণ পূৰ্ব্ব পশ্চিম কিছুই জানে না । আমি কোথা হইতে আসিতেছি, জাপানে কতজন ভারতবাসী ছাত্র আছে, তাহীদের মাসিক আয় কত ইত্যাদি সে জিজ্ঞাসা করিল। উত্তরে-ছাত্রদের কোন আয় নাই, প্রতি মাসেই ভারত হইতে টাকা আনিয়া বিস্তর খরচ করিতে হয় শুনিয়া সে অবাক হইয়া বলিয়া উঠিল, তবে ছেলেরা জাপান ছাড়িয়া এখানে কেন চলিয়া আইসে না ? এখানে দরোয়ানী কাযে মাসিক ১০ টাকা উপার্জন করিয়া আহারাদি বাদে অন্ততঃ চারি টাকা দেশে পাঠাইতে পরিবে । মনের ভাব চাপা দিয়া বন্ধুদিগকে লেখাপড়া ছাড়িয়া দরোয়ানী কাযে সাজাই অসিতে লিখিব বলিয়া তাহাকে আশ্বাস দিলাম; বাস্তবিক তথা হইতে বন্ধুদিগকে এ বিষয় জ্ঞাপন ও করিয়াছিলাম। মনে মনে ভাবিলাম, হা ভগবান ভারতের লোককে এমনই অবস্থার অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত রাখিয়াছ যে ছয় হাজার মাইল দূরে অসিয়াও শিক্ষালোকে তাহার নেত্র উন্মীলিত হয় না ?