পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা। দুৰ্ব্বণ, ভীরু ! তাকে তার দলের সঙ্গে শীঘ্রই বীট দিয়ে আঁস্তাকুড়ে ফেলে দেওয়া হবে। কুমারি ! আমি এখন চল্লেম, ঠিক খপর নিয়ে আবার শীঘ্রই ফিরে আসবো ।” ক্যাজটি ছড়ি ও টুপি লইয়া দ্রুতপদে চলিয়া গেলেন । তখন সোফি সহসা একখান আসনে বসিয়া পড়িয়া দুই হাতে মুখ ঢাকিল। গুলিবর্ষণ চলিতেছে, মৃত্যু যন্ত্রণার তীব্ৰ আৰ্ত্তনাদে বাতাস ভারাক্রান্ত হইয়া উঠিল। সোফি কল্পনানেত্রে দেখিতে লাগিল, সুইস সৈন্তগণ তাহার দেশের অটল পর্বতমালার মতই অটলভাবে আপন স্থানে দাড়াইয়া রাজার জন্ত প্রাণ বিসর্জন দিতেছে। “ঈশ্বর শক্তি দান করুন!” হঠাৎ বন্দুকের শব্দ থামিয়া গেল, সোফি ভাবিল, যুদ্ধ শেষ হইয়াছে, কিন্তু সেই মুহূর্তেই একসঙ্গে বজ্রের মত, সহস্ৰ কামান, মহাশব্দে গর্জিয়া উঠিল ! বন্দুকের কামানের চীংকারে প্যারিস র্কাপিয়া কাপিয়া উঠিতে লাগিল। তার পর আবার সে শব্দ থামিয়া জয়ের উল্লাস ধ্বনি ও প্রতিহিংসার হিংস্র চীৎকার সোফির শিরায় শিরায় চলন্ত রক্তস্রোত স্তম্ভিত করিয়া দিল । লোকের দপিত পদধবনি, পৈশাচিক চীৎকার ও মধ্যে মধ্যে পিস্তলের আওয়াজ ক্রমেই নিকটবৰ্ত্তী হইতে লাগিল। সোফি বুঝিতে পারিল, বিদ্রোহীর দলই জয়ী হইয়াছে। এবং একটা ভীষণ নিৰ্ম্মম হত্যtকাণ্ডের অভিনয় করিয়া বেড়াইতেছে। সহসা সেই ঘুর্ণাবৰ্ত্ত হইতে বিচ্ছিন্ন এক ঘোর পরিশ্রাস্ত ব্যক্তির প্রাণপণ শক্তির দ্বারা প্রাচীরারোহণ শব্দ সোফিকে ভয়ে বিস্ময়ে তাদের চয়ন—সুইস গার্ড । ミ&ぬ অভিভূত করিয়া ফেলিল, পরক্ষণেই জানালার মধ্য দিয়া এক দীর্ঘাকৃতি রক্ত পরিচ্ছদধারী যুবক লাফাইয়া পড়িল । সোফি তড়িৎবেগে উঠিয়া দাড়াইল । তার পর আগন্তুকের দিকে চাহিয়| দারুণ আতঙ্কে বলিয়া উঠিল “হেনরি I” পলাতক দৈনিক পুরুষ বিস্ময়ের সহিত কহিল, “সোফি ! ক্ষমা কর! তাড়াতাড়িতে আমি এটা তোমার বাড়ি বলে চিনতে পারিনি, এখনি ফিরে যাচ্চি।” আগন্তুক জানালীর দিকে অগ্রসর হইল । সোফি আতঙ্কে তাহার হাত চাপিয়া ধরিল—“না না ক্যাপ টেন লেসট্রেঞ্জ ! ওরা তোমায় মেরে ফেলবে, তুমি এখানে লুকিয়ে থাক ” “অসম্ভব ! হত্যাকারীদের আমি তোমার বাড়ি স্ত নিতে পারি না ! অসম্ভব। তারা এই রাস্তায় আমায় ঢুকতে দেখেছে। সমুদয় বাড়ি অনুসন্ধান করবে। তোমার উপর আমার কোন দাবী নেই, লিমোইনকুমারি, তুমি তো আমায় ত্যাগ করেছ।” “এ রকম কথা বলেন, হেনরি, তুমি আমায় যত নিষ্ঠুর মনে কর ততো নিষ্ঠুর আমি নই, তোমার এই ভয়ানক বিপদ, তা ছাড়া তুমি আমার স্বদেশী । আর সময় নষ্ট করোনা। যাও,শীঘ্র এই পৰ্দাব মধ্যে যাও,ওখানে অনেক পোষাক আছে।” লেসটেক্স মুহূৰ্ত্তমাত্র ইতস্তত করিল ; একবার সোফির উৎকষ্ঠিত নীল চোখের প্রতি দৃষ্টি করিয়া পরমুহূর্তে তার আজ্ঞা পালন করিল। যখন জীন ক্যাজটি বিজয় গৌরবে প্রফুল্লচিত্তে ফিরিয়া আসিল তখন, সোফি নিবিষ্ট চিত্তে চিত্রাঙ্কন করতেছে, মঞ্চের উপর একজন মডেল সেকালের বড় লোকদের