পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা। তার পর আরো একটা দিন আসিল এবং চলিয়া গেল। ডাকের পিয়নটা দুইতিন দফায় সংবাদপত্র ও চিঠিতে রজনীনাথের পড়িবার ঘরের বড় টেবিলট ভরাইয়া দিয়া গেল ! কিন্তু কোন একখানাতেও প্রত্যাশিত অক্ষরের ছাপ নজরে পড়িল না । সংসারটা কে বলি কার্য্যের জন্ত স্থঃ মনের কোন অবস্থাতেই কাৰ্য্য পরিত্যাগ করিবার উপায় নাই, রজনীনাথ সমাগত মক্কেলদের কাজ দেখিতে উঠিয়া গেলেন। অনেকক্ষণ ধরিয়া তাহদের সহিত মোকৰ্দমা সংক্রান্ত কথা বার্তায় কাটাইয় তাহারা বিদায় হইলে জোর করিয়া উঠিয়া পড়িবার ঘরে আসিয়া মোটামোট আইনের বই খুলিয়া বসিলেন। কিন্তু যতই বেশি আগ্রহের সহিত সেগুলাকে নড়াচাড়া করিতে লাগিলেন তাহদের মধ্য কার ছাপার অক্ষ রুগুলী ততই তাহার মনের মধ্যে দুৰ্ব্বোধ্য ও জটিল হইয়া উঠিতে লাগিল । অবশেষে পিনfলকোডের ধারার উপর একখানা সকরুণ মুখচ্ছবি কেবলি অঙ্কিত হইয়া উঠতে লাগিল। সে মুথের নেগেটিভ খান যে র্তাহারি বুকের মাঝখানে বসান রহিয়াছে, অশ্রুজলে অস্পষ্ট সে সুন্দর বর্ষাধেীত জুইফুলের মতন ক্ষুদ্র মুখখান যে তাহারি আদরিণী অপরাধিনী কন্যার! পিতার পক্ষে সে চিন্তা যেন অসহ হইয়া উঠিল । ミレ* সেদিনও মেঘধূম্ৰ আকাশখান জলভারের গৌরবে বজ বিদ্যুৎ বক্ষে বহিয়া আনিয়া স্তব্ধ হইয়াছিল। নদীর এপারে ওপারে যেখানে সেখানে আকাশখান হেলিয়া পড়িয়া সবুজ গাছগুলার মাথাকে স্পর্শ করিয়া রহিয়াছে ; পোষ্যপুত্র। २br¢ সৰ্ব্বত্রই যেন কালী ঢালা । কালো আকাশের নীচে সবুজ গাছের শ্রেণী আবার সেই সবুজ, ঝোপের মধ্যে মধ্যে কোথাও একট। গtছভর রাঙ্গা ছাতিম ফুল কোথাও বা গোটাকতক কদম্বফুটিয়া গাছ আলো করিয়া রহিয়াছে। আসন্ন বৃষ্টির ভয়ে বক চিল ও পার্থীগুল ঝণক বধিয়া উচ্চ আকাশের কোল দিয়া কৃষ্ণতারক। শ্রেণীর মত ক্ষুদ্রাকারে উড়িয়া যাইতেছিল ; কেবল কাক গুলা তখন ও পৰ্য্যন্ত নিশ্চি স্তু নির্ভরতার সহিত গাছের ডালে ও প্রাচীরের ধারে বসিয়া স্বর অভ্যাস করিতেছিল । আসন্ন বিপদের ভাবনায় তাহারা বর্তমানকে উপেক্ষা করিতে প্রস্তুত নহে । জানালীর নিকটে আরম কেদারথোনীয় পড়িয়া শুমীকান্ত চৌধুরী বিশ্রাম করিতে ছিলেন, নিকটে একটা ছোট টেবিলের উপর চশমার খাপ ও এক থানা বাংলা সংবাদ পত্র পড়িয়া রহিয়াছে সেখানার এখনও তাজ খোলা হয় নাই । একই সময়ে নিজের অন্তরের সঙ্গে ও বাহিরের সহিত র্তাহার যে সংগ্রাম বধিয়া উঠিয়াছিল তাহা হইতে আত্মরক্ষা করা শুমাকান্তের পক্ষে প্রায় অসাধ্য। কৃত কৰ্ম্মের অনুশোচনা ও অকৃত কর্য্যের ফলভোগ র্তাহার পক্ষে এখন অনিবাৰ্য্য হইয়া উঠিয়াছে। মনের দৃঢ়তা বহুপূৰ্ব্বেই যে গিয়াছিল,—কেমন করিয়া এত বড় বড় আঘাতগুলা সহ করিয়া চারিদিককার বিরোধকে শাস্ত করিয়া সামঞ্জস্তা করিয়া চালাইয়া যাইবেন সেকথা মনে করিবার মতন একটা বলও তো সেই চিন্তাজীর্ণ, বক্ষের ভিতর নাই | অবদাদের ক্লাস্তিতে শুভ্র মস্তক ভার হইয়া আসে, স্তিমিত চক্ষু কেবলি মুদিয়া আসিতে থাকে ; উপায় ও চেষ্টা মনের