পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা । এতদিন নিঃসন্দেহ রূপে ত্যাগ করিতে পারেন নাই। কিন্তু আজ তাহার সংশয় দূর হইল। সে যে জুয়াচোর রজনীনাথের জাগে সম্পূর্ণরূপ জড়াইয়া একেবারেই নিজের সর্বনাশ করিয়া বসিবে, এই বাড়ি এই ঘর সমুদয় চুলচেরা করিয়া পোষ্যপুত্র হেমেন্দ্র তাহীর অসহায় দুধের শিশুর সহিত ভাগ করিয়া লইয়া এখানে আসিয়া বসিবে, তাহ তিনি দিব্যদৃষ্টিতে দেখিতে লাগিলেন । আর তখন যে সে একদিন কোনও ছুতায় শিশুকে নিজের ঘরে লইয়া গিয়া তাহার গলাটি টিপিয়া মারিয়া অাম বাগানে ঐ ভাঙ্গা পাতকুয়াটার মধ্যে ফেলিয়া দিবে না তাই বা কে বলিতে পারে। আর যদি বা তা নাও দেয় তবুও এই কড়ি কঁাড়ি পিতলকাসার বাসন, সিন্দুক সিন্দুক সাল দোসাল, রূপাসোনার বস্তু এসবই তো তাহার নিকট হইতে অৰ্দ্ধাঅৰ্দ্ধ ছিনাইয়া লইবে । এমন কি রান্নাঘরের পিড়িগুলি পৰ্য্যস্ত ভাগের হাত এড়াইতে পরিবে না ! এ অত্যাচার অসহ ! হে ঠাকুর ! যে হতভাগার মিনি অপরাধে এমন করিয়া তাহীর গরু মারিতে কোমর বাধিয়া উঠিয়া পড়িয়া লাগিয়াছে তাহীদের কি কখনও ভাল হওয়া উচিত ? না ভাল হইবে ? সিদ্ধেশ্বরী রাগে গস গস করিতে করিতে নীচে তালিয়া জিজ্ঞাসা করিয়া জানিলেন, শিবtণী রান্নাঘরে গিয়া কাহারও নিষেধ না মানিয়া নিজের হাতে মাছের কালিয় রণধিতে বসিয়া গিয়াছে । মাসিম কহিলেন, “এত করে ধারণ করলুম কিছুতেই বোমা শুনলেন না। দেখদেখি কি রকম সাহস—এই গরম !” সিদ্ধেশ্বরীর মুখ কালে হইয়া উঠিয়াছিল 8 পোষ্যপুত্র। శి.సి). ঝঙ্কার করিয়া বলিয়া উঠিলেন "মরুকগে ; পোড়ামেয়ে যাদের বাদিগিরি করতে জন্মেচেন তাদের সেবা করে মরুন ! নেহাৎ মায়ের প্রাণ তাই ওর জন্তে শরীর পাত করে মরি,—থাকতে পারিনে তাই বলি,—কুপুত্তর হলেওতে কুমাত হবার যে নেই। তা অধৰ্ম্মি মেয়েট একবার সেটা ভাবে !” মাসিমা হরি নামের মালা ফিরাইতে ফিরাইতে একটু সহানুভূতির স্বরে কহিলেন “ওকথা আর বলে কেন বোন, ঐ দুঃখেই মরে আছি ! আমার মনটা বড়ই নরম কিনা, কারু কষ্ট দেখলে চোখের জল সামলাতে পারিনে। ওইযে কথায় বলে “আপন দুঃখ অসম্বরি, পরের দুঃখ সইতে নারি”— আমার হয়েচে ঠিক তাই। তা বোন ভাল কথা, আমায় আজ তোমার সেই জল পড়টি শিখয়ে দাও না ভাই। বিধুর ছোট মেয়েট বিকেল থেকে পেট কামড়ে খুন হয়ে যাচ্চে। অমন গুণ তো কোন জ্যান্ত ওষুধেরও দেখতে পাইনে! সেদিন কেষ্ট ছোড়াটার কি কান্নাই থামিয়ে দিলে !” সিদ্ধেশ্বরীর মনের অবস্থা তখন মন্ত্রদানের ঠিক উপযোগী না হইলেও মন্ত্র মাহাত্ম্য শ্রবণে র্তাহীর মনটা হঠাৎ গলিয়া পড়িল । খুলী হইয়। কহিলেন “তা তোমায় শেখাতে পারি বোন । কিন্তু যেন দু’কান না হয়ে যায়; তাহলে আর ওতে কাজ হবে না। এ মস্তর কি ওমনি পেয়েচি ! আমার পিস শ্বাগুড়ির ননদের ‘যা কত সাধ্যি সাধনায় তবে মরবার সময়ে আমায় দিয়ে গ্যাছে ! এ আর কেউ জানে না এই তুমিই যা আজ শুনে নিলে। শোন বলি তবে ; কানের কাছে চুপি চুপি বলতে হবে কেউ কোথা দিয়ে না গুনে ফেলে— ।