পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা । গ্রাহ না করিয়া করিয়া দেয়। সদানন্দের সে গ্রামে আর বাস করা চলিল না। সে খুজিয়া খুজিয়া এক গ্রামের বাহিরে তেপান্তর মাঠে শ্মশানের মাঝে আপনার আস্তান গাড়িল । শ্মশানডাঙ্গায় কেহ তাহাকে বিরক্ত করিতে আসিত না । কালেভদ্রে শব-সঙ্গীরা তাহার কুটীরে আশ্রয় লইত, প্রতিদানে যাহা দিয়া যাইত সদানন্দের তাহাতেই কোনো রকমে দিন-গত পাপক্ষয় হইত। এখানে সদানন্দ এক রকম মনের সুখেই নিশ্চিন্ত ছিল। বেচারার ভাগ্যবিধাতা কিন্তু নিশ্চিন্ত ছিলেন না । একদিন কয়েক জন লোক একটি শব সংকার করিতে শ্মশালে আসিয়াছে । ভয়ানক বৃষ্টি আরম্ভ হইল। তাহারা তাড়াতাড়ি শবটাকে আলিয়। সদানন্দের কুটীরের বাহিরে রাখিল এবং অভ্যর্থনার অপেক্ষা না করিয়াই সদানন্দের কুটীরের মধ্যে ঠেলিয়া ঢুকিয়া পড়িল । ছোট কুটার। তাহার মধ্যে পাচ ছয় জন লোক ঢুকিয়া জটল্প কলরব আরম্ভ করিয়া দিল । সদানন্দের তাহা অসহ বোধ হইতে লাগিল । তাহার উপর তাহারা তামাকের ধোয়ার কুগুলী পাকাইয়। সদানন্দ বেচারাকে একেবারে অতিষ্ঠ করিয়া তুলিল । সদানন্দ আস্তে আস্তে পাশ কাটাহয়৷ কুটীরের দ্বারের মুখে আসিয়া দাড়াইল। মুঘল ধারে বৃষ্টি হইতেছে। শব বাহিরে পড়িয়া ভিজিতেছে। সদানন্দ তাঁহাই দেখিতেছে । হঠাৎ তাহার মনে হইল, শব যেন একটু নড়িল। দানে পাইল নাকি ! একেবারে নাস্তানীবুদ সদানন্দের বৈরাগ্য। రిరి সদানন্দ ভয়ের বড় একটা তেীয়াক্কা রাখিত না, রাখিলে শ্মশান আপনার বাসস্থান বলিয়া বাছিয়া লইতে পারে ? সে দাড়াইয়া দাড়াইয়া রোমবহুল ব্যাপালে ভ্রর তলদেশ হইতে চক্ষু চাড়িয়া দেখিতে লাগিল বাস্তবিকই শব নড়িতেছে। যাহারা শব আনিয়াছিল তাহার ঘরের ভিতরে আপন মনে ধূমপানে ও গল্পজল্পনায় মত্ত ছিল,অtর সদানন্দ ছিল দ্বার আগুলিয়া ; তাহার। বাহিরের ব্যাপার কিছুই জানিতেছিল না। সদানন্দ যখন দেখিল যে শব স্পষ্টই নড়িতেছে তখন সে কুটীর হইতে বাহির হইয় পড়িল । শববাহী একজন বলিল “কি ঠাকুর, কোথায় যাও।” সদানন্দ কোনো উত্তর দিল না । শবের কাছে গিয়া মুখের ঢাক খুলিয়া ফেলিল । শব চক্ষু মেলিয়াছে, বৃষ্টিধারী হাপাইয়া ইপিাইয়া পান করিতেছে। সদানন্দ শবেব ম্যাচক। ধরিয়া হড় হড় করিয়া কুটীরের মধ্যে টানিয়া লইয়া গেল । শববাহীর কোলাহল করিয়া আপত্তির স্বরে বলিল “ওকি ঠাকুর, ওটাকে আবার এর মধ্যে ভরছ কেন ?” সদানন্দ এ কথtয় কর্ণপাত না করিয়া শবের শুশ্রীষায় নিযুক্ত হইল। সকলে সবিস্ময়ে দেখিল শব চেতন লাভ করিয়া উজ্জীবিত হইয়। উঠিতেছে। সকলে ভয়ে বিস্ময়ে অবাক আড়ষ্ট হইয়া গেল। সন্ন্যাসী বালা সিদ্ধ পুরুষ, তাঙ্কার পুণ্যস্পর্শে মৃত শব সঞ্জীবিত হয়, ইহার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পাইয়া তাহাদের রোমাঞ্চ হইল। সকলে ভক্তিভরে মহাপুরুষের পায়ের ধূলা মাথায় লইল । অল্পক্ষণের মধ্যেই গ্রামে রাষ্ট হইয়া গেল