পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ש:bd\ রমেন্দ্রনাথ চমকিয়া উঠিল, “প্রিয়বাবু! এই বৃষ্টিতে!” প্রিয় রমেন্দ্রনাথের বন্ধু । উভয়ে এক সঙ্গে কলেজে পড়িত 1 ল পাশ করিয়া আজ তিন বৎসর সে হাইকোর্টে মিথ্য যাতায়াত করিতেছে ! রমেক্স বাহিরে আসিয়া কহিল, “কিহে ব্যাপার কি ? এই বৃষ্টিতে ! কোটে যাওনি ?” প্রিয় কহিল, “ক্ষেপেছ ! এই বর্ষায় কোর্ট । আর, তা ছাড়া একটু কাজ আছে !” রমেন্দ্র কহিল, “কি কাজ ?” প্রিয় কহিল, “তোমাকে একবার আমার সঙ্গে বারাশত যেতে হবে ।” রমেন্দ্র কহিল, “অপরাধ ?” প্রিয় কহিল, “আরে—এক ফ্যাসাদে পড়েছি, ভাই ! আমার ঐ পিসতুতে ভাইটার বিয়ের জন্ত পাত্রী দেখতে । তারা আবার চলে যাবেন, পিলিমারও বডড জেদ –তাই, একলা কোথায় যাব, এই বৃষ্টিতে ! তোমাকে পাকড়াতে এসেছি, নাও, নাও, আর দেরী নয়—ধড়াচুড়ে পরে নাও — রমেন্দ্ৰ কহিল, ”আহ, দাড়াও ! এই इट्टेि !” “আর দাড়াবার সময় নাই” বলিয়া প্রিয় তাড়াতাড়ি ঘড়ি খুলিয়া বলিল, “এই ত একটা বেজে পচিশ মিনিট হয়েছে! দুটোয় টে,ণ ! আমার রথ প্রস্তুত । তুমি শুধু কাপড়টা ছেড়ে চট্ট করে এসে । তোমায় প্রথম রাত্রেই পৌছে দিয়ে যাব । আর হার ম্যাজেষ্টিও ত এখানে নেই হে ! আহ, এমন বর্ষটি,দাদা, মাঠে মারা গেল ! যাও, যাও,-ওরে ভুলে, বাবুর জাম কাপড় ঠিক করে দে, শীগগির !” ভারতী । ভাজ, ১৩১৭ রমেঙ্গনাথ ট্রেণে চড়িয়া হাফ ছাড়িল । এই যে লাইনের দুই ধারে মাঠের পর মাঠ,দূরে কোথাও গ্রামের সীমা নিমেষের জন্য জাগিয়া উঠিয়াছে,—এই অনাড়ম্বর উদার সৌন্দৰ্য্য, বর্ষায় সবুজ প্রাচুর্য্যের এমন শোভা—এই চিরপরিচিত পল্লীশ্ৰী,—নয়নে কখনো ইহা পুরাতন হইবার নহে ! বিজন মাঠের প্রাস্তে কুটির দেখিয়া রমেন্দ্র কহিল, "বাঃ, কি মুনার ” প্রিয় কহিল, “ঐ টেণ থেকেই দেখতে বেশ ! ওখানে বাস করতে হলে, ব্যাপার ভীষণ হয়ে উঠবে ! না আছে, কাছে বাজার, ল| ডাক্তার —* রমেন্দ্ৰ কহিল, “তোমরা অতি হতভাগ্য ! এমন সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারো না ! কেবল ডাক্তার আর বাজারের ভাবনাতেই আকুল হয়ে ওঠ ! কবি কি বলেছেন, জানো, “নিরাল বনের মাঝে, তৃণগুল্ম যেথা রাজে, রচিব কুটির, প্রিয়ে,তো মারি লাগিয়া, একাস্তে দুজনে রব, যত কথা সবি কব, বিশ্বেরে রাখিব দূরে, দুয়ার রুধিয়া।” প্রিয় কহিল, "তাহলে প্রিয়াকে নিয়ে একবার কবিত্ব-বিকাশের অবসরটুকু আয়ত্ত কর, কবিবর !” প্রিয় ঠাট্ট করিয়া কথাটা বলিল বটে, কিন্তু রমেন্দ্রের মাথায় বেশ একটি সুন্দর মতলব জাগিয়া উঠিল। وي মায়া ঘরে বসিয়া কবিতা নকল করিতেছিল । রমেন্দ্র আসিয়া কহিল, “আমার মাথায় একটা মতলব এসেছে, মায়া।”