পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৩৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতী । ভাদ্র, ১৩১৭ খন্দ মহল ভ্রমণ । g 鬱 ১৯০৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বেলা আট টার সময় মাদ্রাজ মেল হইতে বহরমপুর ষ্টেলনে অবতরণ করিয়া ডাকবাংলা অভিমুখে চলিলাম। দুর্ভাগ্য ক্রমে যাইয়া দেখি সমস্ত বাংলাটি দুইজন শ্বেতাঙ্গ কর্তৃক অধিকৃত হইয়াছে। ষ্টেশনের নিকটেই একটি ধরমশাল আছে শুনিয়া ফিরিয়৷ তদভিমুখে চলিলাম। একটি মান্দ্রীজী ব্রাহ্মণ—গলদেশে উপবীত লম্বমান--দ্বার প্রান্তে দাড়াইয়া ছিলেন। তিনি আমার পোষাকের প্রতি একবার দৃষ্টিপাত করিয়া বলিলেন “এ ধরমশালা হিন্দুর জন্ত” । বিজাতীয় পোষাক পরিধান করিয়াছিলাম, তাহার প্রায়শ্চিত্ত হইল । বলিলাম “আমি ব্রাহ্মণ” । ব্রাহ্মণ আমার কথা বিশ্বাস করিলেন না, বোধ হইল। তখন আগ ষ্ট্য। কোট ও সার্টের বোতাম খুলিয়া মলিন উপবীতটি বাহির করিতে বাধ্য হইলাম । উপবীত দেখিয়া ব্রাহ্মণের মুখ প্রসন্ন হইল । দরজা দেখাইয়া ভিতরে লইয়া গিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন--রাধিয়া খাইবেন অথবা ধরমশালায় ব্রাহ্মণের পাক খাইবেন । বেলা তখন দশটা ৷ বাজার সেখান হইতে এক মাইল। ক্ষুধার তীব্রতায় কহিলাম “আপনার ব্রাহ্মণের পাকই খাইব” । জিনিস পত্র এক ঘরে রক্ষা করিয়া গাড়ীর বন্দোবস্ত করিতে বাহির হইলাম । বহরমপুরে এক রকম অশ্বচালিত শকট আছে তাহার উপরে মাদুরের আচ্ছাদন । তাহাকে বটুকী বলে। খন্দমহল পর্য্যন্ত ঝটুক যাইবে না জনিতাম—কাজেই গরুর গাড়ীর অমুসন্ধান করিতে হইল । দেখতে পাইলাম বাঙ্গালী বেশধারী একটি ভদ্রলোক আমার অগ্রে অগ্ৰে যাইতেছেন । ত্বরিতগমনে র্তাচার নিকটস্থ হইয়া জিজ্ঞাসিলাম “মহাশয় বাঙ্গালী ?” উত্তর পাইলাম “হঁ|” । ধরমশালায় গিয়াছি বলিয়া ভদ্রলোকটি তখন অসুযোগ করিতে লাগিলেন এবং হুকুম করিলেন “এখনি বটুক করিয়া জিনিস পত্রসহ “বাঙ্গালী বাবুর” বাসায় চলিয়া আমুন” । বহরমপুরে তাহদের বাটকে বাঙ্গালী বাবুর বাট বলে। তৎক্ষণাৎ ধরমশালায় প্রত্যাবর্তন করিয়া আমার সঙ্গীসহ বাঙ্গালী বাবুর বাট পৌছিলাম। প্রবাসী বাণালী বাঙ্গালীকে যত্ন করে শুনিয়াছিলাম । কিন্তু পূৰ্ব্বে কখনও প্রত্যক্ষ করি নাই। বাঙ্গালী বাবুর বাটীতে দুইবেল পরিতোযপূর্বক আঃ র করিয়৷ সন্ধ্যার সময় দুইখানা গোধানে সঙ্গীসহ যাত্রা করিলাম । বাঙ্গালী বাবুর ছোট ভাই বহরমপুর কলেজে পড়েন । তাহার সমপাঠী কয়েকটি মন্দ্রিাজী ছাত্র তাহাদের বাটীতে আসিয়াছিলেন ; তাছাদের সহিত অtলাপ হইল । কৃষ্ণবর্ণ মস্তকের সম্মুখ ভাগের অৰ্দ্ধেক কামানো ; কিন্তু দিব্য প্রতিভোজ্জল মুখ । দেখিয় অনেক কথা মনে হইল । ইহার দ্রাবিড় জাতীয়—যে জাতি আৰ্য্যদিগের পুর্কে অধিকাংশ ভারতবর্য দখল করিয়াছিলেন। তাহারাই যে ভারতের আদিম অধিবাসী প্রত্নতত্ত্ববিদগণ এসম্বন্ধেও নিঃসন্দিগ্ধ নহেন ৷ ছেলেবেলায় ইতিহাসে পড়িয়ছিলাম আর্য্যদিগের ভারত জয়ের পুৰ্ব্বে, যে সমস্ত জাতি ভারতে বাস করিত তাহারা একান্ত