পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা । সদ্ধৰ্ম্মচক্রসহজং জনপারিজাতং শ্ৰীদস্তধাতুমমলং প্রণমামি ভক্ত্য ॥ মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া একখানি অতি বৃহৎ ও ভারি রৌপ্য টেবিল দেখিলাম। এই টেবিলের উপর একটি ঘণ্টাকৃতি অতি বৃহৎ সুবৰ্ণ করশু প্রতিষ্ঠিত । এই সুবর্ণ করণ্ডের উপরে যে সকল কারুকার্য দেখিলাম তাহ। বর্ণনাতীত । করণ্ডের উপরিভাগ মণিমাণিক্য মরকত বৈদূৰ্য্য ইন্দ্ৰনীল প্রভৃতি বহুমুল্য ধাতুর দ্বারা সুশোভিত । বৃহৎ করণ্ডের অভ্যস্তরে আর ছয়টি সুবর্ণ করও যথাক্রমে একটির অভ্যন্তরে অপবটি অবস্থিত। প্রত্যেক করওই নানা ধাতুরঞ্জিত। সৰ্ব্বমধ্যস্থিত করও প্রায় ১ ফুট উচ্চ ; উহার মধ্যে নানা ধাতু রঞ্জি ত একটি সুবর্ণ পদ্ম অবস্থিত। সুবর্ণ পদ্মের অভ্যস্তরে বুদ্ধের দস্তধাতু নিহিত। এই দস্তধাতু কুন্দ কুমুমের ন্তায় শুভ্রবর্ণ। উহার উপর বৈদুৰ্য্য ইন্দ্রনীল প্রভৃতি প্রতিফলিত হওয়ায় বোধ হইল যেন দস্তটি ক্ষণে ক্ষণে নানা বর্ণ ধারণ করিতেছে। পূৰ্ব্বমুখ হইয়৷ দাড়াইলে দস্ত হইতে এক প্রকার আভা উদগীর্ণ হইতে দেখা গেল, আবার পশ্চিমমুখ হইয়া দাড়াইলে সম্পূর্ণ বিপবীত প্রকার আভার আবির্ভাব হইল। এই দস্তধাতু যে করওসমূহের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত উহাদের তুলনা জগতে নাই। অনেক ইউরোপীয় পরিদর্শক বলিয়াছেন ক্যাগুিনগরের মালিগাব মন্দির পৃথিবীর মধ্যে সমৃদ্ধতম । লঙ্কাদ্বীপে সৰ্ব্বজনবিশ্রী ত একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে যে ঐ দস্তুধাতু যিনি অধিকার করিবেন তিনি সসাগর পৃথিবীর অধীশ্বর হইবেন। উল্লিখিত বিশ্বাসের বশবৰ্ত্তী হইয়। লঙ্কার বুদ্ধের দন্ত । 8 e Y বিগত ২৫০০ বৎসর কাল অনেক দুরাত্মা এই দস্তধাতু অপহরণ করিবার প্রয়াগ করিয়াছিল। অতীত ক’লে উহা কত বাধা বিঘ্ন অতিক্রম করিয়াছে তাহ শুনিলে অবাক হইতে হয় । নিম্নে এই দন্তের একটি ংক্ষিপ্ত ইতিহাস প্রদত্ত হইল : - ধীশুখৃষ্টর জন্মগ্রহণের ৫০০ বৎসর পূৰ্ব্বে বুদ্ধদেব কুশীনগরে মহাপরিনিৰ্ব্বাণ লাভ করেন। যখন তাহার দেহ ভস্মীভূত হয় তখন র্তাহার এক শিষ্য একট দন্ত তুলিয়া লইয়৷ কলিঙ্গ সাম্রাজ্যের অন্তর্গত দন্তপুরের রাজাকে অর্পণ করেন। ৮০ ০ বংলর কাল এই দন্ত কলিঙ্গরাজ্যে পূজিত হয় । খৃষ্টীয় চতুর্থ শতাব্দীতে দক্ষিণাত্যের পাণ্ডুনামক একজন ব্রাহ্মণ রাজা বৌদ্ধধৰ্ম্মের প্রতি বিদ্বেষবশতঃ এই দন্ত ধাতু অপহরণ করিয়া স্বরাজ্যে লইয়া যান এবং উহার ধ্বংসের নিমিত্ত নানাপ্রকার কৌশল অবলম্বন করেন । তাহার অসৎ উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ায় তিন স্বয়ং বৌদ্ধধৰ্ম্মে দীক্ষিত হন এবং দস্তটা কলঙ্গ সাম্রাজ্যের দস্তপুরের রাজাকে প্রত্যপণ করেন। কিয়ৎকাল পরে আরও বহু আততায়ী পাগমন করিয়া ঐ দস্ত ধাতু অধিকার করিবার নিমিত্ত দন্তপুর আক্রমণ করে। দস্তুপুরের রাজা প্রতিজ্ঞ করিলেন তাহার জীবন যায় সেও শ্ল{ঘ্য তথাপি তিনি দন্ত স্থানান্তরিত হইতে দিবেন না । শক্র কর্তৃক নগর বেষ্ঠিত হইলে রাজা দন্তটা স্বীয় দুহিতার মস্তক স্থিত কেশ মধ্যে লুকায়িত করিয়া ঐ দুহিতাকে জামাতা ও একটা ভিক্ষু সমভিব্যাহারে ব্রাহ্মণের বেশে জলযানে লঙ্কায় প্রেরণ করিলেন এবং স্বয়ং শক্রহস্তে নিহত হইলেন। ৩১ • খৃঃ অব্দে