পাতা:ভারতী বৈশাখ-আশ্বিন ১৩১৭.djvu/৪২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৪শ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা। চয়ন—মুর্শিদাবাদের প্রাচীন কাহিনী । করিবার জন্যই তিনি উtহার স্বদেশ হইতে প্রায় সহস্র মাইল পথ অগ্রসর হইয়। আসিয়াছেন কিন্তু নবাব তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিবার উদ্দেশে এখনও একশত মাইলও অগ্রসর হন নাই ।” আলিবর্দী উত্তরে লিখিলেন—“যেরূপ বর্ষ। উপস্থিত হইয়াছে এবং এই দীর্ঘ যাত্রার ফলে রঘুজি যেরূপ শ্রান্ত ও পীড়িত হইয়াছেন, তাহাভে বধার কয়মাস কোনও সুবিধাজনক স্থানে অতিবাহিত করাই তাহার পক্ষে সমীচীন। র্তাহীর সৈন্তের বিশ্রামের পর লবতেজে রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইবার জঙ্ক প্রস্তুত হইলে তিনি সসম্মানে তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিতে গমন করিবেন, এমন কি তাহার স্বরাজ্যে পৰ্য্যন্ত যাইতে তিনি প্রস্তুত।” শীতের প্রারস্তেই অলিবন্দী রাজধানী ত্যাগ করিয়া বীরভূম যাত্র। করিলেন। নবাবের আগমনের সংবাদ পাইয়া রঘুজি বিহারে পলায়ন করিলেন। তথায় মুস্তাফার ধ্বংসাবিশিষ্ট সৈন্য তাহার সহিত সংযুক্ত হইল। তখন উভয়ে নুতন সৈন্ত সংগ্ৰহ করিবার জন্ত সোল্ নদী পার হইবামাত্র, নবাব নদীতীরস্থ আলিপুর নগরে যাত্র করিলেন । এই খানে উভয় পক্ষে দুই চারিটি খণ্ডযুদ্ধ হইল। এক যুদ্ধে রঘুজি স্বয়ং বন্দী হন, কিন্তু নবাব সৈন্তস্থ দুই জন আফগান সেনাপতির সাহায্য সে যাত্র মুক্তিলাভ করিয়া হবিবের পরামর্শানুসারে অবিলম্বে মুর্শিদাবাদ অভিমুখে যাত্র করেন । নবাবও তৎক্ষণাৎ উtহার পশ্চাদ্ধাবন করেন । সৌভাগ্য বশতঃ রাজধানী লুষ্ঠিত হইবার অব্যবহিত পূর্বেই লবাব নগরদ্বারে আসিয়া উপস্থিত হইলেন । মহারাষ্ট্ৰীয়গণ তখন নগরের সন্নিকটস্থ স্থানগুলি লুণ্ঠনে নিযুক্ত। নবাৰসৈন্ত আসিয়াছে দেখিয় তাহার। অচিরাং পলায়নপর হইল। এমন সময়ে স্বদেশে বিদ্রোহের সংবাদ পাইয়। মহারাষ্ট্র সেনাপতি তৎক্ষণাৎ বেরার যাত্রা করিলেন : মীর হবির উড়িষ্যার অধিপতি নিযুক্ত রছিলেন । মহারাষ্ট্রীয়দিগের এই আকস্মিক দেশত্যাগে নিশ্চিস্ত श्ब्रां नवांव ७श्वग्नि ८मश् छ्श् चांझ१ान cमनाश्रृंउिब्र 8 * > বিশ্বাসঘাতকতার শাস্তিদানে মানস করিলেন । তাহার রঘুজির সহিত যে সকল পত্র দ্বারা ষড়যন্ত্র করিয়াছিল, সেগুলি সাউকতের সাহায্যে বাহির হইয়া পড়িল এবং তাহাদের অপরাধ নিঃসন্দেহ রূপে প্রমাণিত হইল । কিন্তু তাহীদের এই দুস্কৃতি সত্ত্বেও আলিবর্দী তাহাদিগের অতীত উপকার বিস্মৃত হইলেন না। তিনি ক্রোধের বশীভূত হইয় তাহাদিগকে লাঞ্ছিত করিল্প বিদায় দিলেন না ! তাহার। তাহদের সমস্ত ধনরত্ন, পরিবার ও অনুচরবগ লইয়া উচ্চ রাজকৰ্ম্মচারীর উপযুক্ত সমারোহের সহিত রাজধানী ত্যাগ করিয়া তাহাদের জন্মভূমি দ্বারভঙ্গে গমন করিল। ১৭৪০ খৃষ্টাব্দের বিহারবিদ্রোহের পূৰ্ব্বে আমরা তাহদের আর কোণও সংবাদ পাই না । এই প্রাচীন রাজধানীর ইতিহাসে ১৭৪৫ খৃষ্টাব্দ চিরস্মরণীয় থাকিবে । এই সালেই সিরাজ-উদ্দৌলার বিবাহোৎসবে এরূপ সমারেহ হইয়াছিল, যে বিলাস বাহুল্যখ্যাত মুর্শিদাবাদ নগরীতেও তৎপূর্বে এরূপ মহোৎসব আর হয় নাই। কয়েক মাস ধরিয়! নগরে কেবল গীতপাদ্য ও রোশনাই চলিয়াছিল। বৃদ্ধ নবাব প্রিয়তম দৌহিন্ত্রের বিবাহোৎসবকে চিরস্মরণীয় করিবার জন্য কোন স্বত্ত্বের বা ব্যয়েরই ক্রটি করেন নাই। কক্লিঃ আলি বন্দীর জীবনে আরাম ও আনন্দ উপভোগ এই প্রথম | ১৭৪৭ খৃষ্টাব্দে নবাব পুনরায় উড়িষ্য। উদ্ধারে মনে,যোগী হইলেন। উংকলদেশ তখনও মহারাষ্ট্র কবলে। এই লুণ্ঠনকারাদগকে বিতাড়িত করিবার জন্য, নবাব তাহার ভগিনীপতি মিরজফারকে সসৈন্যে উৎকলে প্রেরণ করিলেন । জাফর তথন মেদিনীপুরের ফৌজদার । প্রথম প্রথম জাফর খুব সাহস ও দৃঢ়চিত্ততা দেখাইয়। কয়েকটি যুদ্ধে মহারাষ্ট্রীয়দিগকে পরাজিত করিলেন । কিন্তু উ হার দুৰ্ব্বল চিত্ত অল্পদিনের মধ্যেই ইন্দ্রয় ভোগে উন্মত্ত হইল , শুদ্ধচরিত্র নবাব এই সংবাদ পাইয়৷ বিশেষ ক্রুদ্ধ হইলেন। নূতন ফৌজদারের অপদার্থতার সুযোগ গ্রহণ করিতে বেরার মহারাষ্ট্ৰীয়েরাও বিলম্ব করিলন ।